কুমিল্লার মুরাদনগরে দাফনের প্রায় ৬ মাস পর আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য এএসএম রেজাউল বারী চঞ্চল নামের এক প্রকৌশলীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা গ্রাম থেকে ওই প্রকৌশলীর মরদেহ উত্তোলন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। চঞ্চল (৩৫) চাপিতলা গ্রামের প্রয়াত কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের ভূইয়ার ছেলে।
হত্যার অভিযোগে পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে অভিযোগের প্রেক্ষিতে চঞ্চলের মরদেহ উত্তোলন করা হয়।এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হান মেহবুব, ইউপি চেয়ারম্যান কাইয়ুম ভূইয়া ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ|মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা গ্রামের কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের ভূইয়া সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন।
তার ছেলে প্রকৌশলী এসএম রেজাউল বারী চঞ্চল ফিলিপাইনে থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর চঞ্চল বাপ-দাদার জায়গা-জমির খোঁজখবর নিতে এসে দেখেন ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে চাচা আব্দুছ ছালাম ভূইয়া অধিকাংশ জমি দখল করে নিয়েছেন। পরে পৈতৃক এসব জায়গা-জমির কাগজপত্র সংগ্রহ করেন চঞ্চল।এ নিয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে চাচা এবং চাচাতো ভাইয়েরা চঞ্চলকে বেধড়ক মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। কিন্তু এসব ঘটনা চঞ্চল তার মা এবং ভাইকে জানাননি। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে চঞ্চল হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে তার মা ভাইকে জানানো হয়।কিন্তু দীর্ঘ ৫ মাস পর বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। এ নিয়ে এলাকায় জানাজানি হলে চঞ্চলের মা মনোয়ারা তাহের বাদী হয়ে গত ২২ জুলাই কুমিল্লার আমলী আদালতে ছেলেকে হত্যার অভিযোগে মামলা করেন।
১ আগস্ট মামলাটি বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ এফআইআর করলে তদন্ত শুরু করে পিবিআই।চঞ্চলের মামা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ বলেন, জায়গা-জমি দখল করতেই চঞ্চলকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয় এবং পরে তার মৃত্যু হয়েছে। আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্য ঘুরাফেরা করলেও তাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ।পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার কবর থেকে প্রকৌশলী চঞ্চলের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এবং সার্বিক তদন্ত শেষে এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে