সরকারি বিএম কলেজের ছাত্রাবাসে অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক হিটারে রান্না করতে গিয়ে সম্প্রতি বিদ্যুতপৃষ্ঠ হয়ে মারা যায় মানিক নামে এক মেধাবী ছাত্র। এরপর থেকেই হোষ্টেল কর্তৃপক্ষ বৈদ্যুতিক হিটারের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যায়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য কলেজের ছাত্রাবাসগুলোতে অভিযান চালিয়ে অবৈধ বৈদ্যুতিক হিটার ধ্বংস করতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিএম কলেজের বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রী নিবাসে অভিযান চালানো হয়। অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক হিটার ধ্বংস করা হয়।
এছাড়া সাধারন ছাত্রীদের অভিযোগ ছিল-ছাত্রী নিবাসের কয়েকজন নেত্রী ডাইনিং এ ফ্রি খাচ্ছেন। এসব নেত্রীরা ডাইনিং এ না এসে রুমে খাবার নিয়ে তাদের সহযোগীদেরও ফ্রি খাওয়াচ্ছেন। নেত্রীদের ফ্রি খাওয়া বন্ধে রুমে খাবার নেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া সন্ধার পরে ছাত্রী নিবাসের বাইরে আসা-যাওয়ার ও গভীর রাতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে হলে প্রশাসন।
হলে ফ্রি খাওয়া বন্ধ, বৈদ্যুতিক হিটার ধ্বংস এবং রাতে নির্ধারিত সময়ের পরে হালের বাইরে যাওয়া-আসায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় হোস্টেল সুপার ও সহাকারী সুপার উপর নাখোস হয় কতিপয় নেত্রী। অবৈধ সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত হয়ে এসব কতিপয় নেত্রী তাদের কিছু সহযোগী নিয়ে হলে সহকারী সুপারের বিরুদ্ধে কলেজ প্রশাসনের কাছে নানা অভিযোগ করে। অভিযোগ করে আবার ছাত্রী নিবাসে বিক্ষোভও প্রদর্শন করে। ছাত্রী নিবাস সূত্রে জানা যায়, কলেজের নব্য এক ছাত্রলীগ নেতা ও এক শিক্ষকের ইন্ধনে এসব নেত্রীরা তাদের সহযোগীদেও নিয়ে আন্দোলন করে কলেজ প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা বহাল রাখতে চায়। তবে কলেজ প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছেন-সাধারন ছাত্রীদের অধিকার রক্ষায় এসব কতিপয় অবৈধ সুবিধাভুগীদের বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ বিগত সময়ের মতো কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রী নিবাসের সহকারী সুপার ও বিএম কলেজ শিক্ষক পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সরদার জানান, ছাত্রীদের জীবন রক্ষায় বৈদ্যুতিক হিটার ধ্বংস, ডাইনিং থেকে খাবার রুমে নেয়া বন্ধ এবং রাতে নির্ধারিত সময়ের পর ছাত্রী নিবাসে আসা-যাওয়ায় উপর কড়াকড়ি আরোপ করায় কিছু অবৈধ সুবিধাভুগী নাখোশ হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষেও নিয়ম বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে যাওয়ায় একটি দুষ্টু চক্রের ইন্ধনে কিছু ছাত্রী উত্তেজিত হয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছে। এসব অভিযোগ অমূলক।
হল সুপার আবু সাদেক মো: শাহ আলম হাওলাদার বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরে সেখানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চেস্টা করে যাচ্ছি। ডাইনিং এর পরিবেশ সুন্দর রাখতে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। আর এতে অনিয়মে অভ্যস্থ কিছু ছাত্রীর সমস্যা হতে পারে। সে কারনে হয়তো তারা এমন অভিযোগ তুলেছে। তদন্ত করলে সঠিক তথ্য বেড়িয়ে আসবে।
উল্লেখ্য-বিগত সময়ে ছাত্রী নিবাসের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা ও সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে নৈতিক স্খলনজনিত কারনে নেত্রী পুতুলসহ অনেককে হল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। তবে সাধারন ছাত্রীদের অভিযোগের কারনে এসব নেত্রীদের বিরুদ্ধে আবাররও কঠোর অবস্থান নিয়েছে হল প্রশাসন।