মাসে লাখ লাখ টাকা মোটরসাইকেল ইন্স্যুরেন্স ফি নেয়ার বিপরীতে কি সুবিধা দেয়া হয় জানেনা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো। সোজা কথা ট্রাফিক পুলিশের মামলা থেকে সুরক্ষার জন্য ২শ ২৫টাকা মুল্যের ইন্স্যুরেন্স করা হয়। এমনটিই জানালেন নিটল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লি: এর বরিশাল দপ্তরের হেড অব ব্রাঞ্চ জাহিদ হোসেন। কিন্তু ইন্স্যুরেন্স বিধিমালা অনুযায়ী বীমা গ্রহীতার ঝুঁকি মোকাবেলা বা ক্ষতিপুরণ দেয়া হয়। সেক্ষেত্রে মটরসাইকেলের জন্য এ ইন্স্যুরেন্স সুবিধা নেই তাহলে উক্ত ফি দেয়ার প্রয়োজন কি এর কোন সদ্ত্তুর দিতে সমর্থ হয়নি বীমাকর্তা। এনিয়ে তিনি আরো বলেন, তবে মোটরসাইকেলের যে ইন্সুরেন্সটি ৭/৮হাজার টাকায় করা হয় সেটির ক্ষেত্রে বীমাগ্রাহক ক্ষতিপুরণ প্রাপ্ত। কিন্তু মানুষ এটি করতে চায়না অল্প টাকা যেটি সেটিই বেশি করে। সুত্রে জানা গেছে, প্রগতি, রিল্যায়েন্স, সিটি জেনারেল, মেঘনা ও রুপালীসহ নগরীতে প্রায় ৪০টি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী রয়েছে । নতুন ও নবায়নসহ প্রতিটি কোম্পানি মাসে প্রায় দেড় শতাধিক মোটরসাইকেল ইন্স্যুরেন্স সম্পন্ন করে। এদিকে প্রতিদিন ট্রাফিক পুলিশ প্রায় শতাধিক মামলা মোটরসাইকেল চালকদের প্রদান করে থাকে যাদের ইন্স্যুরেন্স করা নেই অথবা ইন্স্যুরেন্সের নবায়ন হয়নি। এ মামলায় ট্রাফিক পুলিশ জরিমানা আদায় করে ২ হাজার টাকা। জরিমানার অংক বড় হলেও বীমা করতে প্রয়োজন ২শ ২৫ টাকা। অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনেকেই ট্রাফিক পুলিশের জরিমানার ভয়ে মোটরযান বীমা করে থাকেন। কিন্তু এই বীমা কেন, কি জন্য বা এর দ্বারা কি হয়, এই প্রশ্নের উত্তর জানেনা তারা। প্রতিবছর বীমা রিনিউয়াল করতে হয়। ডেট ফেল হলে জরিমানা দিতে হয়।
মোটরযান বীমা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারনে, এই বীমার উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হয় অনেকেই। বাংলাদেশে মোটরযান বীমাকে দুটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। ১) কমপিয়েনসিভ বা ফাস্ট পার্টি। কমপিয়েনসিভ বীমার প্রিমিয়াম মোটর সাইকেলের দাম এর উপর নির্ভর করে। মোটর সাইকেলের মূল্য ১লক্ষ টাকা হলে, প্রিমিয়াম দিতে হবে ৩হাজার টাকা। এর ফলে আপনি ৩টি সুবিধা পাবেন। (ক) মোটর সাইকেল দূর-ঘটনায় মৃত্যুতে ৩০হাজার টাকা। (খ) প্রতি অঙ্গহানীর জন্য ৫হাজার টাকা। (গ) মোটর সাইকেল হারিয়ে গেলে মোটর সাইকেলের সম্পূর্ন মূল্য। (২) অ্যাক্ট লাইবেলিটি বা থার্ড পার্টি। যেখানে সাধারণত ২২৫ টাকা প্রিমিয়াম জমা দিতে হয়। এর ফলে আপনি ২টি সুবিধা পাবেন। (ক) মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় মৃত্যুতে ২০হাজার টাকা। (খ) প্রতি অঙ্গহানীর জন্য ৫হাজার টাকা। বীমা সংশ্লিষ্টরা বলেন, রাস্তায় পুলিশী হয়রানি থেকে বাঁচতে নামমাত্র ‘থার্ড পার্টি ইন্স্যুরেন্স’ করে মোটরসাইকেল মালিকরা।
তাই এসব ইন্স্যুরেন্স মূলত কোন প্রতিকার দিতে পারে না দুর্ঘটনায়। এব্যাপারে বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশের সহকারি পুলিশ কমিশনার মো: ফাইজুর রহমান বলেন, এই ইন্সুরেন্সটি দ্বারা তেমন কোন সুবিধা পায়না মটরসাইকেল মালিকরা এবং এর জরিমানাও বেশি। দায়িত্বের অংশ হিসেবে আমরা কেবল ইন্স্যুরেন্সের মেয়াদ ও অন্যান্য তথ্য মিলিয়ে দেখি। একদিকে ইন্স্যুরেন্স ফি দিয়ে তেমন কোন সুবিধা না পাওয়া এবং অপরদিকে নবায়ন না করা হলে জরিমানা দিগুন। এহেন পরিস্থিতির বিষয়ে একাধিক মোটরসাইকেল মালিক বলেন, আমি যেহেতু ফি জমা দেই অবশ্যই তার বিপরীতে কর্তৃপক্ষ আমাকে সুবিধাপ্রাপ্ত করবেন। অন্যথায় এ ফি নেয়ার কোন বৈধতা বা নীতিগত মুল্য নেই। সুত্রে জানা গেছে, প্রায় প্রতিদিনই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১০/১৫জন আহত হয়ে শেবাচিম হাসপাতলে ভর্তি হয় এবং আহতরা কেউই শারিরীক কিংবা বাইকের কোন সুবিধা পায়না ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলো থেকে অথচ তাদের প্রত্যেকেই বাধ্যতামুলকভাবে ইন্সুরেন্স করতে হচ্ছে।