বরিশাল নগরীর হাসপাতালের রোডে একটি ফ্ল্যাট থেকে তিশা কর্মকার (২৩) নামের এক গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্বামীসহ শ্বশুর পরিবারের লোকজন এই বিয়োগান্তের ঘটনাটিকে আত্মহত্যা করে দাবি করলেও পুলিশ তরুণীর শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখে করে খুনের আলামত পাচ্ছে। ওই এলাকার কর্মকার ভবনের তৃতীয় তলায় প্রাণবিয়োগের এই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে শনিবার দিনভর চলে নাটকীয়তা। এর আগে শুক্রবার রাতে তরুণীর ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করে। পুলিশ এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তরুণীর স্বামী বাপ্পীকে হেফাজতে নিয়েছে।
নিহত তিশা কর্মকার পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার বাশতলা গ্রামের সুকদেব কর্মকারের মেয়ে। তিন বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে বাপ্পীর সাথে তিশার বিয়ে হয়।
পুলিশ জানায়, গৃহবধূ তিশার হাতে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী বাপ্পী কর্মকারকে আটক করা হয়েছে। তিশার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হবে।
এদিকে স্বামী বাপ্পীর দাবি, শুক্রবার রাতে বাথরুম থেকে বের হওয়ার পর তিশাকে ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে দ্রুত নামিয়ে আনেন। এবং বুঝতে পারি তিশার আর বেঁচে নেই। এ সময় বাসায় আমার বোন রাখিও উপস্থিত থেকে সেও বিষয়টি দেখেছে। এরপর তিশার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়। বিষয়টিতে আইন জটিলতার কারণে কাউকে জানানো হয়নি। তিশা যে কোন কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়, এমনটিও দাবি করেন বাপ্পীর।
তবে স্থানীয়রা বলছে, দীর্ঘদিন ধরে বাপ্পী ও তিশার পরিবার ওই ভবনে ভাড়া থাকেন। তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। তবে কি কারণে এবং কিসের জন্য তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হতো সে বিষয়ে তারা তেমন কিছু জানা যায়নি। তবে ধারণা, যৌতুক নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতয়ালি) মো. রাসেল জানান, খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। তিশার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বামী বাপ্পী কর্মকারকে আটক করে নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, জানান পুলিশ কর্মকর্তা।’