রুপন কর অজিতঃ আজ মহা সপ্তমী। বরিশালে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ। বরিশালের পুজা মন্ডপগুলোতেও নেওয়া হয়েছে দুর্গোৎসবের জমজমাট প্রস্তুতি। গতকাল সন্ধ্যাবেলায় দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মাধ্যমে অকালবোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।এবার মা আসছেন গজে আর চলে যাবেন নৌকায়।
ঢাক-ঢোল আর কাঁসার বাদ্যে শুরু হলো দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। সপ্তমী তিথীতে নবপত্রিকা স্নান ও সিদ্ধিদাতা গণেশের পাশে কলাবউ স্থাপন করা হবে। এইদিনেই প্রাণ সঞ্চার করা হবে দেবীর মৃন্ময়ীতে। সোমবার মহা অষ্টমী তিথিতে সনাতনী নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সকলে মিলে দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দেবে। এইদিনই হবে সন্ধীপূজা। মাতৃরূপে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা করে জগজ্জননীর উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করে হবে ‘কুমারী পূজা’। শাস্ত্রমতে, এদিন পূজিত কুমারী কন্যার নামকরণ করা হয় দেবীর ৬ষ্ঠ রূপ ‘উমা’।
ভক্তদের মতে, এটি একাধারে ঈশ্বরের উপাসনা, মানববন্দনা আর নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা। মূলত: নারীর সম্মান, মানুষের সম্মান আর ঈশ্বর আরাধনাই কুমারী পূজার অন্তর্নিহিত শিক্ষা। নবমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর মহা প্রসাদ বিতরণ করা হবে। ৫ই অক্টোবর দশমী তিথিতে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বিদায় জানানো হবে দেবী দুর্গাকে। আর দেবীর এই আগমনকে ঘিরেই ব্যস্ত সময় পার করছেন বরিশালের সকল পূজা সংশ্লিষ্টরা।
বরিশাল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মানিক মুখার্জী জানান, এবার বরিশাল জেলা ও মহানগরে মোট ৬৪৫ টি মন্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে।অধিকাংশ মন্ডপে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা ও কঠোর নিরাপত্তা । করোনার কারণে গত দুই বছর সীমিত পরিসরে উৎসব হলেও এবারের প্রস্তুতি বেশ জাঁকজমকপূর্ণ।
ঝাউতলা সার্বজনী পূজা মন্দির কমিটির সাধারন সম্পদক সুজয় সেন বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে দুর্গাপূজার আনন্দ ভালোভাবে উপভোগ করা যায়নি। এবার প্রকোপ কম থাকায় সুন্দর পরিবেশে পূজা উদযাপন করা যাবে। প্রশাসন ও স্বেচ্চাসেবকদের সমন্বয়ে শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপন হবে বলে তিনি মনে করেন।
বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, বরিশাল জেলা পুলিশের থানাগুলোর আওতায় ৫৩২টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন করতে এসব মণ্ডপগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় স্থায়ীভাবে মোট ৬০০ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। কেউ যদি পূজামণ্ডপে অরাজকতা করার চেষ্টা করে তাহলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, বন্দর ও কোতোয়ালি মডেল থানা এলাকা মিলিয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপ রয়েছে ১১টি। সেই পূজা মণ্ডপগুলোতে ৫ জন করে পুলিশ থাকবে, পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের সহায়তা করবে আনসার সদস্যরাও।
তিনি বলেন, মহানগরের সকল পূজামণ্ডপেই মোবাইল টিম থাকবে। পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছি।