চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা বিদেশিদের হাতে দিলে প্রতিরোধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার ভার বিদেশি কোম্পানির হাতে দেওয়ার প্রক্রিয়া আওয়ামী লীগ সরকার অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়েছিল। সেই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি করে লাভবান হতো আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের। কিন্তু সেই ফ্যাসিস্টের পতন হলেও এর প্রতিভূ যেন এখনো রয়ে গেছে।’
মঙ্গলবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন সেলিম।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি টার্মিনালটি একটি আয়বর্ধক টার্মিনাল। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে যথেষ্ট বিনিয়োগ রয়েছে।টার্মিনালটি দেশীয় অপারেটর দ্বারা সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এই মুহূর্তে বিদেশি বিনিয়োগের কোনো প্রয়োজন নেই এবং বিনিয়োগের কোনো সুযোগও নেই। গত সরকারের আমলে টার্মিনালটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার পাঁয়তারা সৃষ্টি করেছিল। সরকার পরিবর্তনের পরেও পূর্বের ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসররা কোনো একটি নির্দিষ্ট মহলের ওপর ভর করে টার্মিনালটি বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্তে এখনো লিপ্ত আছে। এখান থেকে বর্তমান সরকারকে সরে আসতে হবে।’
শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দিলে বন্দরে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা বেকার হয়ে পড়বে এবং শ্রমিক অসন্তোসসহ বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হবে।’
তিনি বলেন, ‘বতর্মানে চট্টগ্রাম বন্দর দেশীয় বার্থ অপারেটর ও টার্মিনাল অপারেটর দ্বারা অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তাদের বন্দর পরিচালনায় দীর্ঘ ৩০-৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাদের দেশীয় ও আন্তর্জাতিকমানের টার্মিনাল পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতাকে কোনোভাবেই অবজ্ঞা করার অবকাশ নেই।’
বিএলডিপির মহাসচিব বলেন, ‘সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালটি তুলে দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করেছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা বিদেশি বিনিয়োগের বিপক্ষে নই। তবে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে না দিয়ে অন্য জায়গায় বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে নতুন টার্মিনাল করতে পারে।’
‘দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে লোকসানের মুখে রেখে, দেশীয় অপারেটরদের ব্যবসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে কাকে লাভবান করতে চায় সরকার’- প্রশ্ন রেখে শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডকেই এনসিটি পরিচালনার ভার দিতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এখন সেই সরকারের প্রতিনিধিত্ব করা হচ্ছে কি সেই একই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে?’
সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রচারিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের প্রভাবে ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। তাতে লাভ হতো সালমানের। ফলে অবিলম্বে দেশবিরোধী এই চক্রান্ত থেকে সরে না এলে আমরা রাজনৈতিকভাবে কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’