মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া বন্দরে অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে, তালিকাভুক্ত রাজাকার এনায়েত হোসেন খানসহ চারজনের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
আদালতের বিচারক মো. ফারুক হোসেন শুনানি শেষে রোববার অভিযোগটি আদেশের জন্য দিন ঠিক করেছেন।
বৃহস্পতিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি অভিযোগটি দাখিল করেন উজিরপুর উপজেলার মুন্ডুপাশা গ্রামের মন্নান সিকদারের ছেলে কৃষক লীগ নেতা নান্নু সিকদার। তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন শিপু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার জয়শ্রী গ্রামের কলম খানের ছেলে রাজাকার এনায়েত হোসেন খান, দক্ষিণ ধামুড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে বেলায়েত বিশ্বাস, কচুয়া গ্রামের জব্বার খানেরর দুই ছেলে জলিল খান ও শাহ আলম খান । এছাড়া শান্তি কমিটির অজ্ঞাতনামা কয়েকজন সদস্যসহ ২০ থেকে ২২ জন পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর এতে ধর্ষণের শিকার এক নারীসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে সাক্ষী করা হয়েছে।
অভিযোগটির বরাত দিয়ে সালাউদ্দিন শিপু জানান, ১৯৭১ সালের ৮ মে পাক বাহিনীকে নিয়ে আসামিরা স্থানীয় হিরু মিয়া এবং ডা. হরেন নামের দুই বাঙালিকে ধরে নিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া একই বছরের ১৭ অক্টোবর ৩০/৩২ জন পাক সেনাকে নিয়ে পাক বাহিনীর দোসর এনায়েত খান ধামুড়া বন্দরে হানা দিয়ে প্রায় ৭০/৭২ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। বন্দরটিকে আগুন দিয়ে লুটপাট করে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। এক নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে আসামিরা।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, উজিরপুর মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কমান্ড কর্তৃক ২০১৬ সালের উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয় থেকে পাঠানো ০০১.১৬-৭৮ স্মারকের চিহ্নিত তালিকাভুক্ত রাজাকারদের তালিকায় চারজনেরই নাম রয়েছে। তার মধ্যে ২২ নম্বর রাজাকার এনায়েত হোসেন খান, ২৯ নম্বর রাজাকার বেলায়েত বিশ্বাস, ৩০ নম্বর রাজাকার আব্দুল জলিল খান ও ৩১ নম্বর রাজাকার শাহ আলম খান।
অভিযোগকারী কৃষক লীগ নেতা নান্নু সিকদার বলেন, একজন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোক হিসেবে মামলাটি করেছি। রাজাকারদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হলে দেশ ও জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে।