এপ্রিল ২৫, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ইসলাম ধর্ম

যে কারণে সাওয়াব ও গোনাহের সমান অংশীদার মানুষ

ইসলাম ডেস্ক:

মানুষের দুনিয়ার জীবনে নিয়তের গুরুত্ব অনেক বেশি। শুধু নিয়তের কারণে কাজ না করেও অনেকে সাওয়াবের অংশীদার হয় আবার অনেকে গোনাহের অংশীদার হয়। যার নিয়ত যেমন হবে তার প্রাপ্তিও তেমন হবে।

হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য চমৎকার এক দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন। যে দৃষ্টান্ত প্রতিটি মানুষকেই সঠিক নিয়তের দিকে ধাবিত করবে। হাদিসে এসেছে-

রাসুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘এ উম্মতের দৃষ্টান্ত (ওই) ৪ ব্যক্তির উদাহরণের মতো।

– এক ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা সম্পদ ও ইলম (জ্ঞান) দান করেছেন। অতঃপর সে তার জ্ঞান দ্বারা (নেক) আমল করে আর তার সম্পদকে হক (সঠিক) পথে খরচ করে।

– অন্য এক ব্যক্তিকে আল্লাহ ইলম দান করেছেন কিন্তু তাকে সম্পদ দেননি। অতঃপর সে বলে, আমার যদি এ ব্যক্তির মতো সম্পদ থাকত, তাহলে আমি ওই ব্যক্তির মতোই কাজ (সঠিক পথে খরচ) করতাম।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘সাওয়াবের ক্ষেত্রে তারা উভয়ই সমান।’

– আবার আল্লাহ তাআলা অন্য এক ব্যক্তিকে সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু তাকে ইলম (জ্ঞান) দান করেননি। অতঃপর সে তার সম্পদকে অহেতুক কাজে অন্যায় পথে খরচ করে।

– অপর এক ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা সম্পদ ও ইলম কোনো কিছুই দেননি। অতঃপর সে বলে, ‘আমার যদি ওই (অহেতুক কাজ করা) ব্যক্তির মতো সম্পদ থাকত, তবে আমিও ওই ব্যক্তির মতো কাজ করতাম।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘গোনাহের ক্ষেত্রে তারা উভয়ই সমান। (ইবনে মাজাহ)

এ হাদিসটি বিশ্বমানবতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেউ ইলম ও সম্পদ দিয়ে সাওয়াব অর্জন করে আর কেউ শুধুমাত্র নিয়তের কারণে সম্পদ ছাড়াই সাওয়াবের অধিকারী হয়।

আবার কেউ জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও অন্যায় কাজে সম্পদ খরচ করে গোনাহগার হয়, আবার কারো জ্ঞান ও সম্পদ নেই ঠিকই শুধু নিয়তের কারণে সম্পদ অন্যায় পথে খরচ না করেই গোনাহগার হয়।

মনে রাখতে হবে
দুনিয়া হচ্ছে পরকালের পরীক্ষাগার। এখানের পরীক্ষায় যে পাস করবে আখেরাত হবে তার জন্য সহজ ও শান্তির স্থান। আল্লাহ তাআলা মানুষকে যেমন কাজের স্বাধীনতা দিয়েছেন। তেমনি অনেক হিকমতও শিখিয়েছেন। তুলে ধরেছেন অনেক উপমা।

একই সুবিধা ভোগ করে কিছু বান্দা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করে আবার কিছু বান্দা গোনাহগারে পরিণত হয়। অথচ উভয় ব্যক্তিই আল্লাহর দেয়া আলো-বাতাস ও রিজিক সমানভাবে ভোগ করছে। শুধু নিয়তের কারণেই সাওয়াব ও গোনাহের অংশীদার হয় তারা।

তাই আল্লাহ তাআলা মানুষের কর্মফল দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তির সাদা-কালো, ধনী-গরিব হওয়ার বিষয়টি দেখবেন না বরং তিনি মানুষের অন্তরের বিষয়টি দেখে থাকেন। হাদিসে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের চেহারা ও সম্পদের দিকে তাকান না, বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও কর্মের দিকে লক্ষ্য করেন।’ (মুসলিম)

হাদিসে অন্তরের দিকে লক্ষ্য করার কথা বলে মানুষের নিয়তকেই বুঝানো হয়েছে। ভালো হোক কিংবা মন্দ হোক মানুষের নিয়ত হলো কাজের উদ্দেশ্য সফল করার মাধ্যম এবং প্রতিরক্ষক। অন্য এক হাদিসে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

‘যে ব্যক্তি ভালো কাজের পরিকল্পনা করল, কিন্তু বাস্তবে সে কাজ করতে পারল না, সে ব্যক্তির জন্য সাওয়াব লেখা হবে।’ (মুসলিম)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের পরিকল্পনা বা নিয়ত হোক ভালো কাজের জন্য। যে পরিকল্পনা বা নিয়তের কারণেই মুমিন পাবে সাওয়াব ও কল্যাণ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় ভালো কাজ করার পাশাপাশি অন্তরে ভালো কাজের নিয়ত রাখার তাওফিক দান করুন। মন্দ কাজ পরিহারের সঙ্গে সঙ্গে মন্দ কাজের সমর্থন করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সম্পর্কিত পোস্ট

রোজা রেখে আতর-পারফিউম ব্যবহার করা যাবে?

banglarmukh official

গর্ভবতী নারীর রোজার মাসয়ালা

banglarmukh official

তারাবির নামাজ ছুটে গেলে করণীয়

banglarmukh official

রোজা অবস্থায় কি দাঁত ব্রাশ করা যাবে?

banglarmukh official

চাঁদ দেখা গেছে, সৌদি আরবে রোজা শুরু শনিবার

banglarmukh official

শাবান মাসে কত তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখা যাবে

banglarmukh official