এপ্রিল ২৪, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ ঢাকা প্রশাসন

আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি, আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

ওসি সাহেব আমি আমারা স্ত্রীকে হত্যা করেছি। আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় গিয়ে ঘাতক স্বামীর এমন স্বীকারোক্তিতে অনেকটা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান থানার বড় কর্মকর্তা। দায়িত্বরতদের ডেকে তিনি বলেন, এই লোক কি পাগল নাকি সত্যি বলছে।

পরে ওসির নির্দেশে ঘটনা যাচাইয়ে খুনীর বাড়ির দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী পুলিশ পাঠিয়ে পাওয়া যায় সত্যিই সে তার স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় এসছে আত্মসমপর্ণ করতে।  চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায়।

হত্যার শিকার স্ত্রী আফরিনর আক্তার রীনা (২৩) নাটোর জেলার বাদীপাড়া থানার সাবদিয়া গ্রামের আবদুর রহিমের মেয়ে। আর ঘাতক স্বামী মেহেদী হাসান মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার নিজামউদ্দিনের ছেলে।

ঘাতক স্বামী মেহেদীর বরাত দিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি এস এম মঞ্জুর কাদের জানান, ঘাতক  মেহেদী হাসান(২৭) ও  নিহত স্ত্রী আফরিন আক্তার(২৩) রীনা দু’জনই পূর্বেই বিবাহিত ছিল। দু’জনের আগের সংসারে  সন্তান রয়েছে। মেহেদী ও আফরিন ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকার একটি হোসিয়ারিতে একই সঙ্গে কাজ করার সময় পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে প্রায় দুই বছর আগে তারা দুজনেই আগের সংসারে তালাক নিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

বিয়ের পর স্বামী মেহেদী তার মা জোছনা বেগম, বাবা নিজামউদ্দিন ও স্ত্রী রীনাকে নিয়ে পঞ্চবটি চাঁদনী হাইজিং এর ওমর ফারুকের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বসবাস শুরু করেন। এরই মধ্যে দুজনের  সংসারে তৈৗহিদ নামে একটি  ছেলে শিশু জন্ম নেয়। বর্তমানে তৈৗহিদের বয়স (৫)।হত্যার শিকার রীনার পরিবারের বরাত দিয়ে ওসি আরও জানান, বিয়ের পর স্বামী মেহেদীকে  আড়াই লাখ টাকা ঋণ দেয় রীনার পরিবার।

এই টাকা নিয়ে ৪ অক্টোবার বৃহস্পতিবার রাতে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। সেই সময় স্ত্রী রানী মেহেদীকে টাকার খোটা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেহেদী গাঁমছা দিয়ে রীনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ৫ অক্টোবর শুক্রবার সকালে ঘাতক মেহেদী তার মা জোসনা বেগমকে জানায়, সে রাগের বশে স্ত্রী রানীকে হত্যা করেছে।

সেই সময় মেহেদীর মা জোসনা বেগম ছেলে মেহেদীকে সাফ জানিয়ে দেয় তুই যদি আমার ছেলে হয়ে থাকিস তাহলে থানায় গিয়ে নিজের খুনের কথা স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করবি। কথামত বেলা ১১ টার দিকে মেহেদী ফতুল্লা মডেল থানায় চলে যায় । থানায় গিয়ে সে প্রায় আধা ঘন্টা ধরে থানা কমপাউন্ডে এদিক সেদিক ঘোরাফেরা করতে থাকে। এতে মেহেদীর গতিবিধি থানায় কর্তব্যরতদের  সন্দেহ হয় এবং মেহেদীর কাছে থানায় আসার কারন জানতে চায় দায়িত্বরতরা।

মেহেদী জানায়, ওসি সাহেবের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেবে। পরে ওসির রুমে হেদেকে নিয়ে গেলে সে ওসিকে বলেন আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি। আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। ঘটনা সত্যতা যাচাইয়ে পুলিশ পাঠিয়ে খুনের সত্যতা সঠিক হওয়ার পর আত্মসমপর্নকৃত মেহেদীকে থানায় হাজতে টাক রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

ঘটনাটি মর্মান্তিক উল্লেখ করে ওসি আরও জানান, রাগের বশে মেহেদী এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে অনুশোচনা ও তার মায়ের সৎ পরামর্শে মেহেদী থানায় এসে আত্মসমপর্ণ করেছে। প্রত্যেকটি বাবা মায়ের মেহেদীর মায়ের মত হওয়া উচিত। পাশাপাশি আমাদের সকলকে রাগের সময় নিজেদের নিয়ন্ত্রন করা উচিত। প্রবাদ আছে  রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

বগুড়ায় স্কুলছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

banglarmukh official

হিজবুত তাহরীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

banglarmukh official

সাংবাদিকরা ভুয়া নিউজ করে আমাদের ১২টা বাজিয়ে দিচ্ছে

banglarmukh official

রমজানে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে বরিশাল

banglarmukh official

ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা এখন এক নর্দমা

banglarmukh official

ডেভিল হান্টে গ্রেফতার আরও ৬৭৮

banglarmukh official