নিয়ন্ত্রিত বিচারব্যবস্থায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ভিন্নমতের কারোরই ন্যায়বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং নিম্ন আদালতের আরেক বিচারপতির দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর বিচারকদের মধ্যে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে রোববার সমিতির শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিতারণ জাতিকে একটি সঙ্কটে ফেলেছে। যে দেশে প্রধান বিচারপতি বিচার পান না, সে দেশে খালেদা-তারেক আমরা কেউ বিচার পাব না। ন্যায়বিচার পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। তিনটি স্তম্ভের একটি প্রশাসন, যেটা এখন পুলিশ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং রাষ্ট্রটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বাকি দুটি স্তম্ভ (বিচার ও আইন) অসহায় হয়ে পড়েছে।’
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকলে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে আজ জেলে যেতে হতো না এবং তারেক রহমানের ওপর এই ধরনের নির্যাতন হতো না। আমাদের লড়াই করতে হবে বিচারবিভাগের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণের জন্য।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি চার বিচারপতিকে ডেকে নিয়ে গেলেন, তাদের শিখিয়ে দিলেন। তারা এসে রাষ্ট্রপতির কথামতো বললেন, তোমার সঙ্গে (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) আমরা বিচারে বসবো না। অভিযোগের মামলা দায়েরের আগেই বিচার হয়ে গেল। সাবেক বিচারপতিকে বের করে দেয়া হয়েছে আইনজীবীদের অনৈক্যের কারণে।
গণতান্ত্রিক আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে দেশে নিয়ন্ত্রিত বিচারব্যবস্থা চলছে। ১৬ কোটি মানুষ আজ অবরুদ্ধ। দেশের মানুষ আজ কারাগারে। এখন একদিনের জন্য একটা ভোটের মহড়া হয়। এই সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়েছিল, এখন এই সরকার একটি অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকার।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেন, ‘উচ্চআদালতের রায়ের মাধ্যমে তারেক রহমানের বাকস্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে।’
গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দেশে এখন কোনো ন্যায়বিচারের পরিবেশ নেই। বিচারকরাই যেখানে আতঙ্কিত সেখানে খালেদা-তারেক বা বিরোধী দলের কারোরই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নেই।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, প্রধান বিচারপতি এখন রিফিউজিতে পরিণত হয়েছেন। আরেক বিচারপতি যিনি তারেক রহমানকে খালাস দিয়েছিলেন তিনি মালয়েশিয়ায় পালিয়ে গিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
সেমিনারটি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।