সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা করেছেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি। আজ রোববার ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর মামলাটি আমলে নিয়ে মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তার করা গেল কি গেল না, সে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন আগামী ২২ নভেম্বরের মধ্যে জমা দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দণ্ডবিধির ৫০০, ৫০৬ ও ৫০৯ ধারায় মইনুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন দৈনিক অর্থনীতি-এর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি। আজ ঢাকার আদালতে হাজির হয়ে তিনি মামলা করেন।
মাসুদা ভাট্টির আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হীরু বলেন, মাসুদা ভাট্টি দণ্ডবিধির ৩ ধারায় মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আদালত মাসুদা ভাট্টির মামলাটি আমলে নিয়ে মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। মামলার ব্যাপারে মাসুদা ভাট্টি বলেন, তাঁকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আদালতের কাছে তিনি ন্যায়বিচার চেয়েছেন।
১৬ অক্টোবর একটি বেসরকারি টেলিভিশন টক শোতে কথা বলার একপর্যায়ে মইনুল হোসেন দৈনিক আমাদের অর্থনীতি-এর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টিকে চরিত্রহীন বলে আখ্যায়িত করেন। এরপর ১৮ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক জানান, মইনুল হোসেন প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লিখিত বক্তব্যে নাসিমুন আরা হক বলেন, টক শোতে সেদিন মাসুদা ভাট্টি মইনুল হোসেনের কাছে জানতে চান, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে আপনাকে শিবিরের জনসভায় অংশ নিতে দেখা গেছে। সে কারণেই অনেকে প্রশ্ন করছেন যে, আপনি কি জামায়াতের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে উপস্থিত থাকছেন কি না?’ এ প্রশ্নটি শেষ করার আগে মইনুল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে মাসুদা ভাট্টির উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার সাহসের প্রশংসা করতে হয়, তবে আমি আপনাকে একজন চরিত্রহীন বলতে চাই।’ মাসুদা ভাট্টি সেদিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে তাঁর কাছে বুধবার ক্ষমা চান মইনুল হোসেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি ক্ষমা করলেও মইনুল হোসেন অগণিত নারীকে অপমান করেছেন। জনসম্মুখে এ ঘটনা হওয়ায় তাঁকে অপরাধ স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
নারীরা আজ নীরব নয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে সোচ্চার, মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে সাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, নারীর চরিত্র নিয়ে কথা বলেছেন মইনুল হোসেন। তাঁদের জানা থাকা দরকার, বেশি হইচই করলে থলের বিড়ালটা কিন্তু বেরিয়ে পড়বে অচিরেই।