আশুলিয়ায় মাছ চুরির অপবাদে এক শিশুর হাত-পা ও চোখ বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতিত সেই শিশুর নাম মোঃ ফুয়াদ হাসান (১০)।
শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকায় এ শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ফুয়াদ রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার বজ্রপুকুর গ্রামের মোঃ দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। ফুয়াদ বাবা-মায়ের সাথে ঘোষবাগ এলাকার হক সাহেবের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় শেরে বাংলা মডেল হাইস্কুলের ২য় শ্রেনীর ছাত্র।
ভুক্তভোগী শিশু ফুয়াদ জানায়, শনিবার দুপুরে সে বাড়ির পাশের তৈয়বপুর খালের ধারে খেলতে যায়। একপর্যায়ে কয়েকজন বন্ধু মিলে ওই খাল থেকে তিনটা কই মাছ ধরে। এসময় ওই খালের সাথে থাকা মাছের হাসেন আলী ছেলে খামারের মালিক আনসার আলী ও রফিজ উদ্দিনের ছেলে জলিল মিয়ার মাছ চুরির অপবাদ দিয়ে তাকে আটক করে। পরে নাইলনের রশি দিয়ে তার হাত-পা বেধে কাচা কঞ্চি দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য পিটাতে থাকে জলিল ও তার লোকজন। একপর্যায়ে তার হাত-পা বাধা অবস্থায় প্লাষ্টিকের বস্তা দিয়ে তার মাথাটিও ঢেকে দেয় নির্যাতনকারীরা।
টানা তিন ঘন্টা মারধরের পর বিকেলের দিকে সে তার এক বন্ধুর সহায়তায় ব্লেড দিয়ে হাত-পায়ের বাঁধন কেটে পালিয়ে আসে।
শিশুটির মা রোকেয়া ভানু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি পেটের দায়ে জিরাবো এলাকার ফাইভ এ্যাপারেলস কারখানায় চাকুরী করি এবং ওর বাবা রাজমিস্ত্রীর জোগালি কাজ করে। ছেলেটি সারাদিন বাসায় একা থাকে। রাতে বাসায় এসে জানতে পারি মাছ চুরির অপবাদে আমার ছেলেকে বেধরক পিটিয়ে আহত করেছে আনসার ও জলিল। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে নির্যাতনকারীরা ভয়ভিতি প্রদর্শনসহ বিভিন্নভাবে আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার জোরে যারা আমার ছেলেকে মিথ্যা মাছ চুরির অপবাদে নির্যাতন করেছে আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই।
মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে মৎস খামারের অপর একজন মালিক আব্দুল গনি মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ফুয়াদসহ কয়েকজন ছেলে মিলে প্রতিদিন খামারের মাছ চুরি করে। তারা রাতের আধারে কারেন্টজাল দিয়ে মাছ মেরে নিয়ে যায়। আজকে ওদের একজনকে ধরে সামান্য মারধর করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে আশুলিয়া থানার ওসি আব্দুল আউয়াল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, একটি শিশুকে নির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।