বরিশাল ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান সুজনের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ এক ছাত্রলীগ কর্মীকে পেটানোর গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। গতিপথ রোধ করে সিদ্দিকুর রহমান নামে ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে সুজন ও তার ভাই জহির প্রকাশ্যে পিটিয়ে এক নয়া সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সুজনের বিরুদ্ধে এর আগেও বিরোধী মতের একাধিক রাজনৈতিক হেনস্তার নানা উদাহরণ রয়েছে। বিশেষ একটি মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয় থাকার কারণে তার লাগাম টানা যাচ্ছিল না। ফলে তিনি নিজ এলাকা বরিশালের চরকাউয়া-সাহেবেরহাটে ধারাবাহিক সন্ত্রসের জন্ম দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এবার এই ছাত্রলীগ নেতা বরিশাল সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীকের অনুসারী সিদ্দিকুর রহমানকে পিটিয়ে যেন নিজ আঙিনায় রীতিমত আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতের চরকাউয়া জিরো পয়েন্টে সুজন ও তার জহিরের এই প্রকাশ্য সন্ত্রাসের ঘটনায় শনিবার একটি সংশ্লিষ্ট বন্দর থানায় একটি অভিযোগ জমা হয়েছে। পুলিশ তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগটি ইতিমধ্যে তদন্তও শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
হামলার শিকার ছাত্রলীগ কর্মী সিদ্দিকুর রহমান অভিযোগ করেছেন- ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে তিনি তার রাজনৈতিক অভিভাবক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর বরিশালের বাসার উদ্দেশে আসার প্রাক্কালে জিরো পয়েন্ট এলাকায় ছাত্রলীগ সম্পাদক সুজন ও তার ভাই জহির পথরোধ করে। এবং বিভিন্ন বিষয়াদী নিয়ে খোদ পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে ‘খিস্তিখেউর’র করে এবং তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে সে দম্ভোক্তি করে বলে তোর নেতা (পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী) আমার কিছু করার সক্ষমতা রাখে না। এবং সাথে সাথে ছাত্রলীগ কর্মীর ওপর দুই ভাই মিলে হামলা চালিয়ে মারধর করে। সর্বশেষ ছাত্রলীগ কর্মীকে সিদ্দিককে নানা ভয়ভীতি দেখায় এবং হত্যারও হুমকি দেয়। প্রতিমন্ত্রী অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে খিস্তিখেউর’র বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগের একটি বড় সংক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে প্রতিমন্ত্রী সমর্থিত বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ বিরাজের বিষয়টি আভাস পাওয়া গেছে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে- পুরো বিষয়টি ইতিমধ্যে প্রতিমন্ত্রী অবগত হয়েছেন। কিন্তু অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের কোন ধরনের সংঘাতে লিপ্ত না হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেছেন। মূলত সেই নির্দেশনার আলোকেই ঘটনার দুদিন পরে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অবশ্য পুলিশ এই অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যে তদন্তও শুরু করে দিয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এই বিষয়টি নিশ্চিত করে বন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলছেন- প্রাথমিকভাবে অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে গ্রহণ করে তদন্ত করা হচ্ছে। থানা পুলিশের এসআই মর্যদার এক কর্মকর্তা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। এতে প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযোগটি মামলায় রুপ নেবে।
তবে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলছেন- রাজনৈতিক শত্রুতা উদ্ধার করতে একটি মহল বিষয়টিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তাকে ফাঁসানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
এই ছাত্রলীগ নেতা দাবি করেন- সেদিন জুনিয়র ছেলেরা ঝামেলা করলে তিনি গিয়ে মিমাংসা করার চেষ্টা করেছিলেন মাত্র।’