দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে বসেছে পদ্মা সেতুর ১৭তম স্প্যান (৪ডি)। জাজিরা প্রান্তের মাদারীপুর এলাকায় মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের সময় স্প্যানটি ২২ ও ২৩ নম্বর পিলারের বসানো হয়।
স্প্যানটি বর্ষার আগে মাওয়া কুমারভোগ কনেস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে এনে জাজিরা প্রান্তের ২৭ ও ২৮ নম্বর পিলারের কাছে বিশেষ কাঠামোর ওপর রাখা হয়েছিল। পরে বিশাল আকৃতির ক্রেন দিয়ে সকাল ৯টার দিকে স্প্যানটি ২২ ও ২৩ নম্বর পিলারের কাছে নিয়ে আসা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে পিলারের ওপর ওঠানোর কাজ শুরু হয়। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের সময় স্প্যানটি পিলারের ওপর তোলার কাজ শেষ হয়। মূল সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি ও সেতু কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে এই স্প্যানটি বসানোর ফলে দৃশ্যমান হয়েছে পদ্মা সেতুর ২ হাজার ৫৫০ মিটার। অর্থাৎ আড়াই কিলোমিটারেরও বেশি।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ন কবীর জানান, ২২ ও ২৩ নম্বর খুঁটিতে বসেছে এই স্প্যানটি। এর ফলে সেতুর ২ হাজার ৫৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। আগামী ৪ অথবা ৫ ডিসেম্বর ১৭ ও ১৮ নম্বর খুঁটিতে বসার কথা রয়েছে ১৮তম স্প্যান। এখন থেকে অল্প সময়ের ব্যবধানে স্প্যান উঠতে থাকবে।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে চীন থেকে আরও দুটি স্প্যান বাংলাদেশে পৌঁছেছে। সমুদ্রপথে গত ১৯ নভেম্বর বিকেলে স্প্যান দুটি মংলা বন্দরে এসে পৌঁছায়। এর আগে গত মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে ১৬তম স্প্যান (৩ডি) ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। ওই স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে সে সময় সেতুর ২৪০০ মিটার দৃশ্যমান হয়। স্প্যান বসার পরে কাজের গতি বেড়েছে।
প্রকৌশলী জানান, সব চ্যালেঞ্জ জয় করে এগিয়ে যাচ্ছে মূল সেতুর কাজ। পিলারের পাশাপাশি, স্প্যান, রোডওয়ে ও রেলওয়ের কাজও এগিয়ে চলছে। পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে পুরো প্রস্তুত এখন ৩৩টি। ৪২টি পিলারের উপর ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার।
২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুতে প্রথম স্প্যান বসানো হয়। এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মূল সেতুর কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। আর নদীশাসনের কাজ করছে সেদেশেরই আরেক প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।