আমন ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চলতি মৌসুমে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী থেকে প্রথমবারের মতো প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনতে যাচ্ছে সরকার। এতে প্রান্তিক চাষিরা আমনের ন্যায্যমূল্য পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে ধান ক্রয়ের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলা থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ১৫ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন ধান কেনা হবে।
সদর উপজেলার কৃষক আবদুস সত্তার বলেন, কৃষি ছাড়া আর কোনো কাজ পারি না। ধান আমাদের কাছে সোনার মতো। ধান ভালো হলে মন ভালো থাকে। ক্ষেতে ধান পাকছে। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু করবো। আমাদের ব্যস্ততা বাড়বে।
গলাচিপা এলাকার চাষি শ্রী সুব্রত বলেন, পারিবারিক পেশা হিসেবে কৃষি কাজ করি। প্রায় ৩০ বছর যাবৎ চাষাবাদ করি কোনো দিন সরকার সরাসরি আমাদের কাছ থেকে ধান কেনেনি। এবার ধান কিনবে শুনছি, আমরা এবার লাভবান হবো।
রাঙ্গাবালী এলাকার চাষি রফিক মিয়া বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছি তখন বললো এবার প্রথমবারের মতো সরকার আমাদের কাছ থেকে আমন ধান কিনবে। ইউনিয়ন পরিষদে আমরা যারা কৃষক ধান বিক্রি করবো তাদের মোবাইল নম্বর ও ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে যেতে বলেছে। এবার অন্তত ন্যায্য দামে ধান বিক্রি করতে পারবো।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত বলেন, ২১ হাজার ৯৩০ জন কৃষকের তালিকা করা হয়েছে। যারা সরাসরি সরকারের কাছে আমন ধান বিক্রি করবে। এ বছর ১৫ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তালিকা করা সম্পন্ন হয়েছে এবং তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবার শতভাগ কৃষকের তালিকা করা হয়েছে। তাদের ব্যাংক হিসাব নম্বর নেয়া হয়েছে। ধান বিক্রয়লব্ধ অর্থ সরাসরি কৃষকের ব্যাংক হিসেবে জমা হবে। এক্ষেত্রে কোনো ফরিয়া, টাউট, সিন্ডিকেটের কাছে টাকা যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
পটুয়াখালী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) এ.বি.এম শফিকুল ইসলাম জানান, ধানের আদ্রতা থাকতে হবে ১৪% আর চিটা হলো (.৫ %), ২০০ ধানের মধ্যে একটি চিটা। কৃষকরা নিজেদের উঠোনে ধান শুকিয়ে যাচাই-বাছাই করে খাদ্য গুদামে নিয়ে আসলে তাদের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ধান বিক্রির টাকা পরিষদ করা হবে।