বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের প্রশ্নপ্রত্র ফাঁসকরে ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহ করার প্রস্তুতিকালে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১ জন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ও ৩ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রয়েছে। এ বিষয়ে দুপুর সোয়া ২ টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কার্যালয়ের ৬ষ্ঠ তলার সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিং করা হয়। প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিন জানান, গোপন সংবাদরে ভিত্তিতে মহানগর গোয়েন্দা (ডিযবি) পুলিশের এসআই আশীষ পালের নেতৃত্বে একটি টিম আজ শনিবার সকালে নগরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আর্শেদ আলী কন্ট্রাক্টর গলির নাহার ম্যানসনে অভিযান চালায়।
যেখানে বাসা ভাড়া নেয় গ্রেফতারকৃত প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্য ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মুয়ীদুর রহমান বাকী (২২)। ওই বাসায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আজকের বিজ্ঞান বিভাগের প্রশ্নপত্র ফাঁসকরে ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তরপত্র সরবরাহ করার জন্য ভাড়াটিয়া বাকীসহ গ্রেফতারকৃত ৬ জন অবস্থান করছিলো। যাদের কাছ থেকে অভিযানের সময় ৫ টি ইলেট্রো ম্যাগনেটিক ব্লুটুথ ইন্ডাকসন (ইয়ারফোন), ৫ টি এটিএম কার্ড সদৃশ ইলেকট্রনিক ডিভাইস, প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজের ব্যবহৃত ১১ টি মোবাইল সীম এবং ২ টি অতিরিক্ত সীম জব্দ করা হয়। পুলিশ কমিশনার জানান, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এটিএম কার্ড সদৃশ ইলেকট্রনিক ডিভাইসে সিম ব্যবহার করে সুক্ষ ইয়ারফোনের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসকরে উত্তরপত্র তৈরিতে সহায়তা করতো এই চক্র। যে চক্রটি ইতিপূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের “ক” ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ সারাদেশে এ ধরনের কার্য পরিচালনা করে আসছিলো।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মোঃ মারুফ হোসাইন মারুফ নামে সিআইডি’ ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের এক সদস্য। তিনি বলেন, পরীক্ষার আগ মুহুর্তে গ্রেফতারের কারনে চক্রের উদ্দেশ্য হাসিল হয়নি। তবে এদের কাছ থেকে লাখ টাকার বিনিময়ে ৩ জনে প্রশ্ন কিনতেও চেয়েছিলো। এদের সাথে যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিষয়ে খোজ নেয়া হচ্ছে, যদি বিশ্ববিদ্যালয়েরও কেউ থাকে তবে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। আটককৃতরা হলো, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মুয়ীদুর রহমান বাকী (২২), সে পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের বিবির হাওলা গ্রামের গাজী হাফিজুর রহমানের ছেলে এবং বরিশাল নগরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আর্শেদ আলী কন্ট্রাক্টর গলির নাহার ম্যানসনের ভাড়াটিয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভু-তত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোঃ মারুফ হোসাইন মারুফ (২২), সে যশোর জেলার বাঘারপাড়া থানাধীন নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নের বলরামপুর ইউনিয়নের মোঃ মুরাদ মোল্লার ছেলে ও অমর একুশে হলের শহীদ বরকত ভবনের ৪০১ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মোঃ আলমগীর হোসেন শাহিন (২৪), সে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালি ইউনিয়নের কার্তিকপাশা গ্রামের মৃতঃ আঃ কাদের হাওলাদারের ছেলে ও অমর একুশে হলের শহীদ বরকত ভবনের ৩০১ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোঃ মাহামুদুল হাসান (আবিদ) (২৩), সে পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌরসভার কলেজ পাড়া এলাকার মোঃ জাহিদুল ইসলামের ছেলে ও অমর একুশে হলের শহীদ বরকত ভবনের ৩০২ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা। গলাচিপা ডিগ্রী কলেজের মানবিক শাখার তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোঃ সাব্বির আহম্মেদ প্রিতম (২৩), সে পটুয়াখালীর গলাচিপা সদর উপজেলার পানপট্টি এলাকার মোঃ জাফর আহম্মেদের ছেলে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিনস্ত মোহাম্মাদপুর ডিগ্রী কলেজের বিবিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোঃ রাকিব আকন (২১) ও পটুয়াখালীর দুমকী সদর উপজেলার লেবুখালীর আবুয়াল হোসেনের ছেলে। এদিকে গ্রেফতারকৃত আলমগীর হোসেন শাহিন নিজেকে ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে দাবী করলেও পুলিশ এর সত্যতা এখনো পায়নি।