বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শারিরীক নির্যাতনের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক নির্মাণ শ্রমিক। শনিবার দুপুরে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে ওই নির্মান শ্রমিক ও বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কালিহাতা গ্রামের বাসিন্দা বানী ঈসরাইল জসিম তার বিরুদ্ধে একটি মামলায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছেন পুলিশের বিরুদ্ধে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বরিশাল নগরীর ২৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ডলি বেগমের ভাই রবিউল আলম জুয়েলের কাছে আমি কিছু টাকা পাই। যে টাকা তুলতে গিয়ে ডলি বেগম ও তার স্বজনরা পরস্পর যোগসাজসে নানান নাটক সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে। যার সূত্র ধরে গত ১৮ আগষ্ট আমাকে উজিরপুর থেকে বরিশালে নিয়ে আসেন এবং শারিরীক নির্যাতন করেন। পরে বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে এবং পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তবে মামলায় যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ডলি বেগম নিজেই সাজিয়ে করেছেন। এদিকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেল-হাজতে প্রেরনের আগ পর্যন্ত দফায় দফায় এয়ারপোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রহমান মুকুল ও এসআই সাইদুর রহমান আমার ওপর শারিরীক নির্যাতন করে। নির্যাতনের মাত্রা এতোই ছিলো যে সহ্য করা আমার পক্ষে কঠিন হয়ে যায়। তারা জোরপূর্বক ভয়ভীতি ও মারধর করে মূলত মামলায় আনিত ডলি বেগমের অভিযোগ আমাকে স্বীকার করতে বলে। আর এই কারনে আমি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য হয়। এদিকে একটি মামলায় দুই ধরনের এজাহার করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন নির্মান শ্রমিক জসিম।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে বিষয়টি মহানগর পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে জানিয়েছি। আমি তদন্ত করে ঘটনার ন্যায় বিচার এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাচ্ছি। যদিও এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও এয়ারপোর্ট থানার এসআই সাইদুর রহমান বলেন, ডলি বেগম যে অভিযোগ নিয়ে এসেছেন তা যাচাই বাছাই করেই ধারা অনুযায়ী মামলাটি নেয়া হয়েছিলো। আর মামলা নেয়ার এখতিয়ার আমার নেই। আমি তদন্ত করে যা পাবো তাই উপস্থাপন করবো। আর জসিমকে থানায় আটকে যে নির্যাতনের কথা বলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যে।’
একই থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, থানায় কাউকে নির্যাতনের কোনো বিষয় আমার জানা নেই। আর বাদী অভিযোগ দেয়ার পর জসিমকে গ্রেফতার করা হয় এবং আদালতে প্রেরণ করা হয়। জসিম তার অপরাধ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে। এরপর সে জামিনে বের হয়ে আমাদের বিরুদ্ধেই নয় ম্যাজিষ্ট্রেটের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলছে। যা আদৌ সত্য নয়।
এদিকে এই বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বাদী ডলি বেগমের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদী ও আসামীর গ্রামের বাড়ি একটি খালের এপার ওপার। ২০১৭ সালে আসামী জসিমের মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতেন বাদী ডলি বেগম। কিন্তু এর আগে থেকেই আসামীর সাথে বাদীর ভাইয়ের টাকা-পয়সা নিয়ে বিরোধ ছিলো। সেই থেকে আসামী বাদী ও তার স্বজনদের ক্ষতি করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলো। ২০১৯ সালের ২৪ মে বাদীর বিবাহ হলে তার স্বামীর মোবাইলে আসামী বিভিন্ন ধরনের আজে বাজে ম্যাসেজ পাঠাতো। সর্বশেষ বাদীর দুটি নগ্ন ছবি কৌশলে সংরক্ষন করে আসামী এবং বাদীর স্বামীর মোবাইলে পাঠায়। যার প্রেক্ষিতে বাদী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেন।