33 C
Dhaka
এপ্রিল ২৪, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় নির্বাচন প্রচ্ছদ রাজণীতি

বিএনপির বিকল্পের পাল্টা জামায়াতের স্বতন্ত্র

বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর আসন সমঝোতা হয়েছিল ২৫টিতে। এসব আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করতে হবে। কিন্তু গতকাল ওই ২৫টির বাইরে আরও ২২টি আসনে জামায়াতের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ নিয়ে শেষ মুহূর্তে ২০–দলীয় জোটের এই দুই শরিকের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।

এদিকে যে ২৫ আসন জামায়াতকে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোতে বিকল্প প্রার্থী দিয়ে রেখেছে বিএনপি। অবশ্য ওই ২৫টির মধ্যে একটিতে গতকাল জামায়াতের প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। ফলে ধানের শীষ প্রতীকের ২৪ জন এবং স্বতন্ত্র ২২ মিলিয়ে জামায়াত মোট ৪৬ আসনে প্রার্থী দিল। অন্যদিকে জামায়াত স্বতন্ত্র হিসেবে যে ১৮ আসনে প্রার্থী দিয়েছে, সেগুলো বিএনপি, এর শরিক অন্য দলেরও প্রার্থী আছে।

জামায়াতের নেতাদের দাবি, তাঁদের চাপে রাখতে সমঝোতা হওয়া আসনগুলোতে বিএনপি বিকল্প প্রার্থী রেখেছে। এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে জামায়াতও ১৮টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান (রাজশাহী-১), প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি তাসনীম আলম (নাটোর-১), নির্বাহী পরিষদের সদস্য ইজ্জত উল্লাহ (সাতক্ষীরা-১), নুরুল ইসলাম বুলবুল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩) ও শফিকুল ইসলাম মাসুদ (পটুয়াখালী-২) এবং সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী (কুমিল্লা-৯) অন্যতম।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে বিএনপির কাছে দুটি অনুরোধ রেখেছিল জামায়াত। এক. যে ২৫টি আসনে সমঝোতা হয়েছে, সেগুলোতে যাতে বিএনপির কাউকে মনোনয়ন দেওয়া না হয়। দুই. ওই ২৫ আসনে যেন জামায়াতের দুজনকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়, যাতে তাদের মূল প্রার্থী কোনো কারণে বাছাইয়ে বাদ গেলে দ্বিতীয়জন ভোট করতে পারেন। কিন্তু বিএনপি প্রতিটি আসনেই জামায়াতকে একটি করে চিঠি দেয়। পাশাপাশি প্রায় সব কটি আসনেই বিএনপি নিজেদের প্রার্থীও মনোনয়ন দেয়। এ নিয়ে দুই দলের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়।

যদিও বিএনপির একটি সূত্র বলছে, শেষ মুহূর্তে জামায়াতের প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করতে না পারলে বা কোনো কারণে প্রার্থিতা বাতিল হলে ওই আসনটি একেবারে ফাঁকা হয়ে যেতে পারে। এই আশঙ্কা থেকে তারা বিকল্প প্রার্থী দিয়ে রেখেছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে জামায়াত বাড়তি ২২ আসনে প্রার্থী দিয়েছে।

এই বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহম​দ বলেন, ‘এগুলো দর–কষাকষি ও চাপ তৈরির জন্য করা হয়।’ তিনি বলেন, প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ ডিসেম্বর। তার আগ পর্যন্ত কোনো কিছুই চূড়ান্ত বলা যাবে না। আরও অনেক সমঝোতা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, কেবল বিকল্প প্রার্থীই নয়; প্রতীক বরাদ্দ নিয়েও বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে মৃদু টানাপোড়েন ছিল। শুরুতে জামায়াতের দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার। তখন বিএনপির দিক থেকে জামায়াতকে উদ্বুদ্ধ করা হয় ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে। শেষ মুহূর্তে জামায়াত মত বদলায় এবং ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা জানায়।

কিন্তু মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন গত মঙ্গলবার রাতে বিএনপির পক্ষ থেকে জামায়াতকে বলা হয় স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে। এ নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে জামায়াত। পরে একপর্যায়ে জামায়াতকে ২৫টি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়।এই বিষয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘এত দিন ওনারাই (বিএনপি) উদ্বুদ্ধ করেছিলেন আমরা যেন ধানের শীষ প্রতীক ​নিই। আমাদের মধ্যে এ বিষয়ে ভিন্ন মত থাকলেও শেষ পর্যন্ত সম্মত হই। কিন্তু বিএনপি মঙ্গলবার রাতে চিঠি ইস্যু করতে এতটা বিলম্ব করে যে আমাদের প্রার্থীদের চিঠি নিয়ে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। ওই অবস্থায় আমরা সন্ধ্যায় আমাদের প্রার্থীদের বার্তা দিয়েছি, তাঁরা যেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।’ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, চূড়ান্তভাবে সমঝোতা হলে দুপক্ষই বাড়তি প্রার্থীদের প্রত্যাহার করে নেবে।

যে ২৫ আসনে সমঝোতা
বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতা হয় ঠাকুরগাঁও-২ (আবদুল হাকিম), দিনাজপুর-১ (মোহাম্মদ হানিফ), দিনাজপুর-৬ (আনোয়ারুল ইসলাম), নীলফামারী-২ (মনিরুজ্জামান), নীলফামারী-৩ (আজিজুল ইসলাম), গাইবান্ধা-১ ( মাজেদুর রহমান সরকার), সিরাজগঞ্জ-৪ (রফিকুল ইসলাম খান), পাবনা-৫ (ইকবাল হুসাইন), ঝিনাইদহ-৩ (মতিউর রহমান), কুমিল্লা-১১ (সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের), কক্সবাজার-২ (হামিদুর রহমান আজাদ), চট্টগ্রাম-১৫ (শামসুল ইসলাম), যশোর-২ (আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন), বাগেরহাট-৩ (আবদুল ওয়াদুদ), বাগেরহাট-৪ (আবদুল আলীম), খুলনা-৫ (মিয়া গোলাম পরওয়ার), খুলনা-৬ (আবুল কালাম আযাদ), সাতক্ষীরা-৩ (রবিউল বাশার), সাতক্ষীরা-২ (আবদুল খালেক), সাতক্ষীরা-৪ (গাজী নজরুল ইসলাম), পিরোজপুর-১ (শামীম সাঈদী), সিলেট-৫ (ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী), সিলেট-৬ (হাবিবুর রহমান), ঢাকা-১৫ (শফিকুর রহমান) ও রংপুর-৫ আসনে (গোলাম রব্বানী )।

এর মধ্যে রংপুর-৫–এ গোলাম রব্বানী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। তিনি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি উপজেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন।
গোলাম রব্বানীর আইনজীবী বায়েজিদ ওসমানী বলেন, তাঁরা চেষ্টা করেও মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের দাবি করেন, পুলিশ ও প্রশাসনের বাড়াবাড়ির কারণে রংপু​র–৫ আসনে গোলাম রব্বানী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। তাঁরা আইনি ব্যবস্থা নেবেন।

জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। গত ২৮ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাই দল হিসেবে জামায়াতের নির্বাচন করার সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত পোস্ট

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official