বৃহস্পতিবার রাতেও বাঁধনের সঙ্গে মোবাইলে এক ঘণ্টা কথা হয় মায়ের। তখন সে মাকে বলে ‘মা আমার প্লেনে চাকরি হলে যখন তখন তোমাকে দেখতে যেতে পারব। বেশি পরিশ্রম করো না।’ কিন্তু শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস রাজ্যের উচিটা শহরে বাংলাদেশি ছাত্র এম হাসান রহমান বাঁধনকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সবসময় ছেলের ফোনের অপেক্ষায় থাকা মা একমাত্র ছেলের এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।
নিহত এম হাসান রহমান বাঁধনের (২৬) বাড়ি গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা সংলগ্ন তেলিপাড়ায়। তিনি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেলিপাড়া সেতু রোডে এলাকার বাসিন্দা প্রকৌশলী মজিবুর রহমানের ছেলে। ২০১১ সালে এরোনেটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি। বাঁধন মা বাবার একমাত্র ছেলে। ছোট বোন মারজানা রহমান ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে।
নিহতের স্বজনরা জানায়, বাঁধন পিৎজা হাট ডেলিভারির কাজ করতেন। ওইদিন রাতে পিৎজা ডেলিভারি দিয়ে সঠিক সময়ে পিৎজা সেন্টারে না পৌঁছানোই পিৎজা কর্তৃপক্ষ পুলিশকে অবহিত করে। রোববার বেলা ১১টায় পুলিশ মরদেহ তার গাড়ির ট্যাংক থেকে উদ্ধার করেন। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করার পর গাড়ির ট্যাংকে ঢুকিয়ে ওই এলাকায় ফেলে আসে। স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় পড়ালেখা করতে গিয়ে এভাবে মারা যাওয়াকে কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা।
উচিটা পুলিশ সোমবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে বাঁধনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। উচিটা শহরের সেন্ট্রাল রক রোডের পাশে ৭৮০০ পেজন্ট লাইভ ওক স্ট্রিট অ্যাপার্টমেন্টের সামনে একটি গাড়িতে বাঁধনের মরদেহ পাওয়া যায়। ময়নাতদন্ত শেষে আইনি প্রক্রিয়ার পর মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উচ্চশিক্ষার আশায় দীর্ঘ সাত বছর আগে তিনি (বাঁধন) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যান। বাটলার কমিউনিটি কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অ্যাসোসিয়েট শেষ করে আগামী সেশনে ক্যানসাস ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষ করেছিলেন। ডিসেম্বরে তার কেইউতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল।