22 C
Dhaka
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
বরিশাল

শীতের আমেজে ব্যস্ত সময় পার করছেন খেজুরের রস সংগ্রহকারী গাছিরা

রুপন কর অজিত// শীতের সকালে শিশির ভেজা ঘাস আর ঘণ কুয়াশায় চাঁদর মোড়ানো গ্রামীণ জনপদ। পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে সকালের ঘুম ভেঙ্গে যায়। শীত আসতেই মনে পড়ে যায় খেজুরের রসের কথা।

শীতের আমেজকে যেনো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয় খেজুরের রস।শীতের মৌসুমে খেজুরের রস দিয়েই গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ।

বাংলার আশ্বিন মাস থেকে সাধারণত রস সংগ্রহ শুরু হয়। তবে পৌষ ও মাঘ মাসে সবচেয়ে বেশি রস পাওয়া যায়, কারণ এই দুই মাসে শীতের প্রকোপ থাকে সবচেয়ে বেশি। আবহাওয়া যত ঠান্ডা থাকে রসও তত বেশি পাওয়া যায়। ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে আর রসও কমতে থাকে।শীত যত বাড়ে খেজুর রসের মিষ্টিও তত বাড়ে।

বরিশাল অঞ্চলে অনেক খেজুরের গাছ দেখা যায়।এ অঞ্চলে কম বেশি খেজুর গাছ থাকলেও গাছির অভাবে মিলছে না রসের দেখা। নগরায়ণের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে গাছিরা।

সরেজমিনে স্বরুপকাঠি জলাবাড়ী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, খেজুরের রস সংগ্রহকারীরা  প্রতিদিন বিকেলে নলি, কোমরবন্ধ রশি সাথে নিয়ে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি ও হাড়ি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখে রসের জন্য। পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করেন।

কেউ কেউ এই কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করেন। অনেকেই আবার এই রস দিয়ে বাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে থাকেন।খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা নলের গুড়, ঝোলা গুড়, দানা গুড় ও বাটালি গুড়ের মিষ্টি গন্ধেই যেন অর্ধভোজন হয়ে যায়।শীতের এই সকালে অনেকেই কিনতে আসেন খেজুরের রস।

এলাকাবাসী জানায়, এক সময় কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালটা যেনও খেজুরের রস ছাড়া জমতো না। শীত ও খেজুরের রস যেনও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকতো। সকালবেলার ঠান্ডা, মিষ্টি খেজুরের রস যেনও অমৃত।

জলাবাড়ী থেকে রস কিনতে আসা আমিনুল ইসলাম দিপু জানান, খেজুরের রস আমার কাছে খুবই পছন্দের। খেতেও দারুণ, সব বয়সী মানুষ খেজুরের রস ও গুড় পছন্দ করে। আমার বাড়ির পাশে থাকায় সকালে ঘুম থেকে আজ খেজুরের রস খেতে আসি এবং বাড়ির জন্যও কিনে নিয়ে যাবো।

কামারকাঠী থেকে আসা খেজুরের রস সংগ্রহকারী কালাম বলেন, শীত বাড়লে আমি প্রতিদিন প্রায় একশত খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। প্রথম দিকে খেজুরের রস কম সংগ্রহ হলেও শীত বাড়ার সাথে সাথে খেজুরের রস সংগ্রহ বাড়বে। খেজুরের রস সংগ্রহ করে কড়াইতে জ্বাল করি।জ্বাল করে তারপর খেজুরের গুড় বানায়। প্রতিদিন ১০-১২ কেজি গুড় বিক্রি করি।সকালে অনেকেই খেজুরের রস খেতে আসে। প্রতি গ্লাস রস ১০ টাকা করে। কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে বিক্রি করি। সকালেই এ রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করি।

প্রভাষক পঙ্কজ রায় জানান, ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অনেক অঞ্চল থেকে গাছি আর রস দুটিই বিলুপ্ত হয়েছে। এক সময় গ্রামের প্রায় সব মানুষ শীতের সকালে বাজার করতে গিয়ে প্রথমেই যেখানে এক গ্লাস খেজুরের রস খেয়ে প্রাণটাকে ঠান্ডা করে বাজার শুরু করত, এখন গ্রামেও সেই দৃশ্য দেখা যায় না বললেই চলে। এখন সরকারি উদ্যোগে দেশের গ্রাম অঞ্চলে বেশী বেশী খেজুর গাছ রোপণ করা প্রয়োজন। তাহলে হয়তো আমাদের ছেলে মেয়েদের মাঝে সেই খেজুর রসের পিঠা উৎসব ও শীতকে ঘিরে গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া বাঙালীর আনন্দো-উল্লাস আবারও ফিরে আসবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

বরিশাল বিমানবন্দর থানার মঙ্গল হাটা গ্রামে মৎস্য খামারের মালিক কে মিথ্যে চাঁদাবাজি মামলায় ফাঁসিয়ে মৎস্য খামার দখল

banglarmukh official

বরিশালে আদালতের তলবে ক্ষমা চেয়ে রেহাই পেলেন ওসি, শোকজের মুখে তদন্ত কর্মকর্তা

banglarmukh official

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে দু’পক্ষের বাকবিতন্ডা, হাতাহাতি

banglarmukh official

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

banglarmukh official

বরিশালে শব্দ দূষণ বন্ধে বরিশালে র‍্যালী ও লিফলেট বিতরণ

banglarmukh official

বরিশালে ইলিশে নিষেধাজ্ঞার ১৮ দিনে ৫৫৬ জেলের কারাদণ্ড

banglarmukh official