এপ্রিল ২০, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অন্যান্য প্রচ্ছদ বিনোদন লেখার কিছু

আজ ব্রিটিশ বিপ্লবী শহীদ তিতুমীরের ১৮২তম মৃত্যুবার্ষিকী

হুজাইফা রহমান:

তিতুমীর , যাঁর প্রকৃত নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী (জন্ম ২৭শে জানুয়ারি , ১৭৮২ , ১৪ই মাঘ, ১১৮২ বঙ্গাব্দ, মৃত্যু ১৯শে নভেম্বর , ১৮৩১ ) ছিলেন একজন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী । তিনি ওয়াহাবী আন্দোলন এর সাথে যুক্ত ছিলেন । তিনি জমিদার ও ব্রিটিশদের বিরূদ্ধে সংগ্রাম ও তাঁর বিখ্যাত বাঁশের কেল্লার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন । ব্রিটিশ সেনাদের সাথে যুদ্ধরত অবস্থায় এই বাঁশের কেল্লাতেই তাঁর মৃত্যু হয় । তিতুমীরের জন্ম হয় চব্বিশ পরগনার বসিরহাটের চাঁদপুর গ্রামে (বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে) । তাঁর পিতার নাম মীর হাসান আলী এবং মাতার নাম আবিদা রোকেয়া খাতুন ।

তিতুমীরের প্রাথমিক শিক্ষা হয় তাঁর গ্রামের বিদ্যালয়ে । পরবর্তীকালে তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসাতে লেখাপড়া করেন । ১৮ বছর বয়সে তিতুমীর কোরানে হাফেজ হন এবং হাদিস বিষয়ে পাণ্ডিত্য লাভ করেন । একই সাথে তিনি বাংলা , আরবি ও ফার্সি ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভ করেন । ১৮২২ সালে তিতুমীর মক্কায় হজ্জব্রত পালনের উদ্দেশ্যে যান । তিনি সেখানে স্বাধীনতার অন্যতম পথপ্রদর্শক সৈয়দ আহমেদ শহীদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন ও ওয়াহাবী মতবাদে অনুপ্রাণিত হন । সেখান থেকে এসে (১৮২৭) তিতুমীর তাঁর গ্রামের দরিদ্র কৃষকদের সাথে নিয়ে জমিদার এবং ব্রিটিশ নীলকদের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়ে আন্দোলন শুরু করেন । তিনি এবং তাঁর অনুসারীরা তৎকালীন হিন্দু জমিদারদের অত্যাচারের প্রতিবাদে ধুতির বদলে ‘তাহ্বান্দ’ নামে এক ধরনের বস্ত্র পরিধান শুরু করেন । তিতুমীর হিন্দু জমিদার কৃষ্ণদেব রায় কর্তৃক মুসলমানদের উপর বৈষম্যমূলকভাবে আরোপিত ‘দাঁড়ির খাজনা’ এবং মসজিদের করের তীব্র বিরোধিতা করেন ।

তিতুমীর ও তাঁর অনুসারীদের সাথে স্থানীয় জমিদার ও নীলকর সাহেবদের মধ্যে সংঘর্ষ তীব্রতর হতে থাকে । আগেই তিতুমীর পালোয়ান হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন এবং পূর্বে জমিদারের লাঠিয়াল হিসাবে কর্মরত ছিলেন । তিনি তাঁর অনুসারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলেন । তিতুমীরের অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে এক সময় ৫,০০০ গিয়ে পৌঁছায়। তারা সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হয়। ১৮৩১ সালের ২৩শে অক্টোবর বারাসতে র কাছে বাদুড়িয়ার ১০ কিলোমিটার দূরে নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে তাঁরা বাঁশের কেল্লা তৈরি করেন। বাঁশ এবং কাদা দিয়ে তারা দ্বি-স্তর বিশিষ্ট এই কেল্লা নির্মাণ করেন। তিতুমীর বর্তমান চব্বিশ পরগনা , নদীয়া এবং ফরিদপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অধিকার নিয়ে সেখানে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্থানীয় জমিদারদের নিজস্ব বাহিনী এবং ব্রিটিশ বাহিনী তিতুমীরের হাতে বেশ কয়েকবার পরাজয় বরণ করে। তন্মধ্যে বারাসতের বিদ্রোহ অন্যতম। উইলিয়াম হান্টার বলেন, ঐ বিদ্রোহে প্রায় ৮৩ হাজার কৃষকসেনা তিতুমীরের পক্ষে যুদ্ধ করেন।

অবশেষে ১৮৩১ সালের ১৩ নভেম্বর ব্রিটিশ সৈন্যরা তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তিতুমীর স্বাধীনতা ঘোষণা দিলেন, “ভাই সব, একটু পরেই ইংরেজ বাহিনী আমাদের কেল্লা আক্রমণ করবে। লড়াইতে হার-জিত আছেই, এতে আমাদের ভয় পেলে চলবে না। দেশের জন্য শহীদ হওয়ার মর্যদা অনেক। তবে এই লড়াই আমাদের শেষ লড়াই নয়। আমাদের কাছ থেকে প্রেরণা পেয়েই এ দেশের মানুষ একদিন দেশ উদ্ধার করবে । আমরা যে লড়াই শুরু করলাম, এই পথ ধরেই একদিন দেশ স্বাধীন হবে।” ১৪ নভেম্বর কর্নেল হার্ডিং-এর নেতৃত্বে ব্রিটিশ সৈন্যরা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তিতুমীর ও তাঁর অনুসারীদের আক্রমণ করে। তাদের সাধারণ তলোয়ার ও হালকা অস্ত্র নিয়ে তিতুমীর ও তার সৈন্যরা ব্রিটিশ সৈন্যদের আধুনিক অস্ত্রের সামনে দাঁড়াতে পারে নি। ১৪শে নভেম্বর তিতুমীর ও তাঁর চল্লিশ জন সহচর শহীদ হন। তাঁর বাহিনীর প্রধান মাসুম খাঁ বা গোলাম মাসুমকে ফাঁসি দেওয়া হয়। বাশেঁর কেল্লা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

জয়া যেন উঠতি বয়সি তরুণী, ভাইরাল ভিডিও

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official

বরিশালে দুর্ঘটনায় নিহত ২

banglarmukh official

পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মি দেড় শতাধিক যাত্রী উদ্ধার, ২৭ সন্ত্রাসী নিহত

banglarmukh official