22 C
Dhaka
নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ক্যাম্পাস প্রচ্ছদ

ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় উত্তাল রাবি

ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে শিক্ষার্থী অপহরণ ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের সামনে থেকে এক ছাত্রীকে ‘অপহরণ’র ঘটনায় ওই ছাত্রীর সন্ধানের দাবিতে আজ আন্দোলনে নামে বিভিন্ন হলের ছাত্রীরা।

বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।   অবস্থান কর্মসূচি থেকে অপহৃত ছাত্রীর সন্ধানের দাবিতে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ‘শোভা কোথায় জানা নাই, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আট ঘণ্টা চলে গেল, ‘শোভা কোথায় ফিরিয়ে দাও’ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এছাড়া তারা ‘ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নাই’, ‘প্রশাসন চুপ কেন?’ এসব প্ল্যাকার্ডও ধারণ করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের চোখের সামনে আমাদের সহপাঠিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার স্বামীর সাথে তালাক হয়েছে। আইনত তালাক কার্যকর না হলেও তাকে কেউ এভাবে নিয়ে যেতে পারেনা। এভাবে হলের সামনে একটা মেয়েকে তুলে নিয়ে গেল। ক্যাম্পাসে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আজ তাকে নিয়ে গেছে কাল অন্য কাউকে নিয়ে যাবে।

শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবদুস সোবহান বাসভবন থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তাদের আন্দোলন স্থগিত করতে বলেন। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ‘অযৌক্তিক’ উল্লেখ করে তাদের বলেন, ‘এটা তাদের স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপার। স্বামী তার স্ত্রীকে নিয়ে গেছে। অন্যায় হলে সেটা আইন দেখবে। এখানে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। ’

উপাচার্য ওই ছাত্রীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে খুঁজে বের করার আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। পরে উপাচার্য ব্যর্থ হয়ে তার বাসভবনে ফিরে যান।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যলয়ের মধ্যে থেকে একজন ছাত্রীকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর দায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকেই নিতে হবে। কারণ এই সংরক্ষিত জায়গার মধ্যে থেকে এক ছাত্রী অপহৃত হওয়ার মানে এখানে আমরা কেউই নিরাপদ নই। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ যদিও বলছে এটি পারিবারিক ব্যাপার, কিন্তু ক্যাম্পাস থেকে তাকে কেন টেনে হেচড়ে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো? অপহৃত ছাত্রীর সঙ্গে দুই ঘণ্টার মধ্যে আমাদের তার সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে হবে। সে যদি বলে, ভালো আছে নিরাপদে আছে, তবে আমরা আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করবো।

আন্দোলনের এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর বাবা ঘটনাস্থলে আসেন। পরে তিনি উপাচার্যের সাথে কথা বলার জন্য তার বাসভবনে প্রবেশ করেন। উপাচার্যের সাথে প্রায় আধঘন্টা কথা বলে বেরিয়ে এসে প্রশাসনের পদক্ষেপের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘আমি এখনো আমার মেয়ের কোন সন্ধান পাইনি। এজন্য আমি খুবই উদ্বিগ্ন। এখনো জানি না আমার মেয়েকে কে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। তবে তার স্বামী আমার মেয়েকে ‘উঠিয়ে নিয়ে যাবে’ বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার মেয়েকে উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে আমার মেয়েকে যেন দ্রুত ফিরিয়ে দেয়। ’

এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপাচার্য বলেন, ওই ছাত্রীর স্বামী তাকে ডিভোর্স দিয়েছে। তার স্বামী ও স্বামীর বাবা আইনজীবী। তারা আইনের বিষয়টি জানে। ডির্ভোস কার্যকর হতে সময় লাগে। অনেক সময় দুই পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকে, মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে তাদের মধ্যে মিমাংশা করে। এমন কিছু হতে পারে। এটা কোন অপহরণের মতো ঘটনা না। এ ঘটনায় তার পরিবার আইনের আশ্রয় নিবে।

শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে গেলে আনেদালন শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর নেতৃত্বে তারা সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপাচার্যের বাস ভবন ঘেরাও করে। রাতের মধ্যেই শোভাকে অক্ষত অবস্থায় ফেরতের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যেহেতু সামনের বছর তার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ আছে, আর এটা পাবলিক পরীক্ষা, তাই একজনের জন্য ৯৯ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা বন্ধ করা হয়নি। আইনের কাছে আসলে মানবিক বিষয়টি নেই। আমরা সেশনজট কাটিয়ে উঠে বিভাগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি, এখন পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে আবারো বড় ধরনের সেশনজটে পড়তে হবে। ’

এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, শিক্ষার্থী অপহরণ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্মান জানানোয় গোটা জাতি আনন্দিত

banglarmukh official

ধ্বংসাত্মক মানসিকতার কারণে সভ্যতা গুরুতর ঝুঁকির মুখে: ড. ইউনূস

banglarmukh official

উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ানোর কারণ জানালেন রিজওয়ানা

banglarmukh official

সেই মুনতাহার লাশ মিলল নিজ বাড়ির পুকুরে

banglarmukh official

আসিফ নজরুলকে হেনস্তা, যা খতিয়ে দেখতে বললেন রাষ্ট্রদূত আনসারী

banglarmukh official

আমরা একে অপরের ভাই, কেন দ্বন্দ্বে জড়াবো: আদালতে আমু

banglarmukh official