বরিশাল জেলার মধ্যে সদর-৫ আসনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন। এই আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চলছে মনোনয়ন যুদ্ধ। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের একডজন নেতা মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন। এর মধ্যে বর্তমান সাংসদ জেবুন্নেছা আফরোজ দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর তদবির চালাচ্ছেন। যদিও স্থানীয় নেতা-কর্মী কিংবা জনগনের সাথে তার যোগাযোগ নেই বললেই চলে। তার পরেও তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, একডজন নেতা মনোনয়নপত্র ক্রয় করলেও ২ জনের বিষয়ে কেন্দ্রে সুপারিশ করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। তবে কে মনোনয়ন পাবে তা নির্ভর করছে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার উপর ।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ জানিয়েছে এ আসনে মনোনয়ন সংগ্রহকারীরা হলেন বীর বিক্রম মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, বর্তমান সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আলতাফ হোসেন ভুলু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু, মোরশেদা বেগম লিপি, কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম, আমিনুল হক তোতা, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মশিউর রহমান খান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য মোঃ আরিফিন মোল¬া ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন রিপন।
সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানের ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে কয়েকটি পত্রিকার পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্যানার ফেস্টুনের মাধ্যমে প্রচারনা চালিয়ে নিজেকে আলোচনার পাত্র করে রেখেছেন আরিফিন মোল্লা। আর দরিদ্রদের জন্য কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে আলোচনায় রয়েছেন সালাউদ্দিন রিপন। তবে সুনজরে তাদের দু’জনের মধ্যে কেউ নেই।
বরিশাল আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ এবং একাধিক ভোটারের সাথে কথা বলে জানা যায় উভয় স্তরেই মনোনয়ন প্রাপ্তির সম্ভাবনার আলোচনায় রয়েছেন বীর বিক্রম মাহবুব উদ্দিন আহমেদ ও বর্তমান সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজ। রাজনৈতিক মাঠে জনবিচ্ছিন্ন এই সংসদ সদস্য কেন্দ্রে শক্ত অবস্থানে থাকায় মনোনয়ন পেতে পারেন বলে অনেকেই ধারনা করছেন। কিন্তু স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সাথে তার কোন যোগাযোগ নেই। স্থানীয় অনেকেই তাকে জনবিচ্ছিন্ন সংসদ সদস্যও বলে থাকেন। সাবেক সংসদ সদস্য জনপ্রিয় মেয়র শওকত হোসেন হিরনের সহধর্মিনী হওয়ায় সংসদীয় আসনে ভোটারদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করতে না পারলেও হিরনের স্ত্রী হিসেবে বিশেষ করুনা পাবে বলে মতামত ভোটারদের।
তবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে একটি বড় অবস্থান ধরে রেখেছেন বীর বিক্রম মাহবুব উদ্দিন আহমেদ। যে কারণে অনেকেই তাকে নিয়ে আলোচনায় মশগুল। দলের সব অবস্থায় সাথে থাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সফট্কর্নার রয়েছে।
বীর বিক্রম মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বলেন ১২ জন মনোনয়ন ক্রয় করেছেন। তারা সবাই যোগ্য। তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে পারবো না। বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার কাছে সকল তথ্য আছে। তার সিদ্ধান্তই সর্বশ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্ত। আমি একচোখা আমার ভালো আমি বলবো। সভানেত্রীর সিদ্ধান্ত আমার পক্ষে আসলে ভালো।
নির্বাচন নিয়ে মনোনয়ন কেন্দ্রীক প্রাক্ককালীন এই রাজনীতির অবসান হবে দলীয় সভানেত্রীর হাত ধরে। সেই অপেক্ষায় রয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশি এই ১ডজন নেতা। ১ আসনে ১২জনের মনোনয়ন সংগ্রহ রাজনৈতিক কোন বিভাজন নয় বলে মনে করেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল। তিনি জানান আওয়ামীগের যিনি সমর্থক তিনি মনোনয়ন ক্রয় করতে পারেন। কিন্তু কে মনোনয়ন পাবে সেই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর। বরিশাল-৫ আসনে যতজন মনোনয়ন সংগ্রহ করুক আমি মনে করি না এদের মধ্যে কোন বিরোধ রয়েছে। দল যাকে মনোনয়ন দিবে আমরা সবাই তার হয়ে কাজ করবো।
বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজ বলেন আমি শতভাগ নিশ্চিত মনোনয়ন পাবো। এর বেশি কিছু বলতে পারবো না।