কাজী সাইফুল
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি হাসপাতালের কর্মরতদের কর্তৃক স্বজনদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। রোববার বেলা সাড়ে ১২ টায় ঘটে যাওয়া এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল এলাকায় উত্তাপ বিরাজ করলে থানা পুলিশ, হাসপাতাল প্রশাসন গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
হাসপাতাল ও প্রতক্ষদর্শী সূত্রে জানাগেছে, নগরের কাউনিয়া এলাকার মোঃ জালাল জমাদ্দের ছেলে মোঃ কবির জমাদ্দার (৪৫) শারিরীক অসুস্থতার (স্ট্রোক) কারনে ২৪ নভেম্বর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪ র্থ তলার মেডিসিন-৪ নং ইউনিটে ভর্তি হয়। শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে আজ বেলা পৌনে ১১ টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর স্বজনরা তার মৃতদেহ নিয়ে বাড়িতে চলে যাওয়ার সময় সেবিকা ও চিকিৎসকদের দরজায় এলোপাথারি লাথি মারতে থাকে এবং জানালার গ্লাস ভেঙে দেয়। এসময় তারা অকথ্য ভাষায় হাসপাতালে কর্মরতদের গালগাল করতে থাকে।
পরে চিকিৎসক-নার্স ও স্টাফরা মিলে মৃতের স্বজনদের কাছে এর কারন জানতে চাইলে বাক-বিতন্ডা হয়। এসময় রোগীর স্বজনরা চিকিৎসক-নার্সদের সাথে অশালীন আচরন করলে ওয়ার্ডের প্রবেশদ্বার আটকে দেয় কর্তব্যরতরা। পাশাপাশি মৃতের ছেলে পাবেলসহ ২ স্বজনকে আটকে মারধর করা হয়। পরে থানা পুলিশ, হাসপাতাল প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে মূল উশৃঙ্খলকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের ধরা যায়নি বলে জানিয়েছেন প্রতক্ষদর্শীরা।
এ বিষয়ে ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সেবিকারা জানান, মারা যাওয়ার পরও পরিস্থতি স্বাভাবিক ছিলো, কিন্তু মৃতদেহ নেয়ার সময় ১৫/২০জন স্বজন এসে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করে ওয়ার্ডে সাধারণ রোগীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেয়। পরে সবাই মিলে এর প্রতিবাদ জানালে চিকিৎসকদেরও লাঞ্চিত করার চেষ্টা করে মৃতের স্বজনরা। এসময় ২ জনকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়। তবে মৃতের ছেলে পাবেল জানান, তাকে আটকে চিকিৎসক ও ওয়ার্ডের অন্য স্টাফরা মিলে মারধর করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তিনি কথা বলতে চাইলেও কেউ তার কথা শোনেন নি।
অপর এক স্বজন জানান, গতকালও রোগীর অবস্থা ভালো বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা, আজ হঠাৎ মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছিলো না। আর মৃত্যুর আগ মুহুর্তে সেবক পর্যায়ের কাউকেই হাতের কাছে পাওয়া যায়নি। ইন্টার্ন ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজু আহমেদ জানান, মূল ঝামেলা সেবিকাদের সাথে হয়েছে, কিন্তু রোগীর স্বজনরা ওয়ার্ডের ভেতরে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে সবাই আতঙ্কে ছিলো। ওই পরিস্থিতিতে ওয়ার্ডের গেট আটকে দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পরে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ আব্দুল কাদের, স্থানীয় কাউন্সিলর মজিবুর রহমান ও থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ আব্দুল কাদের জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন, পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।