ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের উৎপাত বন্ধ ও নিরাপত্তার দাবিতে রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বুধবার সকালে অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়ে হোস্টেলে ফেরার পথে এ হামলার শিকার হয় ছাত্রীরা। এতে পাঁচ ছাত্রী আহত হয়েছেন।
হামলায় আহতরা হলেন, আইএইচটির ফার্মেসী বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রুপা (১৯), নাজনিন আক্তার (১৮), ল্যাব বিভাগের ছাত্রী নিশাত (১৮), ল্যাবের প্রথম বর্ষের ছাত্রী মোহনা, আফরিন শারমিন ও বৃষ্টি।
এরপরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ছাত্রদের দুপুর ১টার ও ছাত্রীদের বিকলে ৩টার মধ্যে হোস্টেল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বহিরাগতদের উৎপাত ও নিরাপত্তরার দাবিতে আইএইচটি’র ছাত্রীরা সকাল ১০টার দিকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের কাছে যান। লিখিত অভিযোগ করার পরেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ছাত্রীরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করে তাকে অবরুদ্ধ করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা। এ সময় ছাত্রলীগের একটি পক্ষ ছাত্রীদের পাশেই অবস্থান নেয়।
পরে পুলিশ আন্দোলনরত ছাত্রীদের অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে বের করে আনার সময় তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আহত ছাত্রীরা জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রায় ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। ছাত্রী হোস্টেল হলেও তাতে তারা ঢুকে পড়ে। এনিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তারা অধ্যক্ষের কাছে মৌখিক অভিযোগ করে আসছেন। বুধবার তারা লিখিত অভিযোগ নিয়ে যান। অধ্যক্ষ তাদের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস না দিলে, তারা সেখানে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন। এরপর পুলিশ ও অধ্যক্ষের আশ্বাসে তারা হোস্টেলে ফেরার পথে আইএইচটি ছাত্রলীগ সভাপতি জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
নগরীর রাজপাড়া জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রাশিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকায় পরিস্থিতি বেশি দূর গড়াতে পারেনি। পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইএইচটি ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আইএইচটি অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন দাবি নিয়ে ছাত্রীরা আমার কাছে এসেছিল। তবে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তাদের হোস্টেলের ভেতরে চলে যেতে বলা হয়। কিন্তু এখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনার জের ধরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পরে তাৎক্ষণিকভাবে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডাকা হয়। সভা শেষে ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ছাত্রদের দুপুর ১টা ও ছাত্রীদের বিকেলে ৩টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি খুলে দেওয়া হবে।