বিরোধীদের হট্টগোলে সারা দিনের মতো ভন্ডুল হয়ে গেল ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার অধিবেশন। শুক্রবার অধিবেশনের শুরুতেই সম্প্রতি গুজরাট বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং’এর সঙ্গে পাকিস্তানের নাম জড়িয়ে নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যের বিরুদ্ধে রাজ্যসভায় হইচই শুরু করেন কংগ্রেসের সাংসদরা। তাদের দাবি অবিলম্বে সংসদে এসে নিজের ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। ওই সমস্যার সমাধান না হলে সংসদ চলতে দেওয়া হবে না।
মোদিকে উদ্যেশ্য করে মোদির ‘পাক চক্রান্ত’এর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁর বিবৃতির দাবি জানিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরেই সংসদে অচলাবস্থা জারি রেখেছে কংগ্রেস। আজ সকালেও অধিবেশন শুরুর পরই রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদ বলেন, সমাধান সূত্র না পাওয়া পর্যন্ত সংসদের অধিবেশন বন্ধ থাকা উচিত।
যদিও সংসদীয় মন্ত্রী বিজয় গোয়েল জানান, সংসদের অধিবেশনকে চলতে দেওয়া হোক পাশপাশি এই সময়ের মধ্যে সমাধান সূত্রও খুঁজে বের করা হোক। এটা এমন কোন সমস্যা নয় যে এর সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে না।
দুই পক্ষের মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যের মধ্যেই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইনা নাইডু জিরো আওয়ারে সংসদ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিরোধীরা তাতে বাধা দেওয়ায় আজকের মতো সংসদ মুলতুবী করে দিতে বাধ্য হন চেয়ারম্যান। সাপ্তাহিক ছুটি ও খ্রিস্টমাসের ছুটি থাকায় আগামী ২৭ ডিসেম্বর ফের সংসদের অধিবেশন বসবে।
গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। কিন্তু একাধিক ইস্যুতে বিরোধীদের হট্টগোলের কারণে বারবার ভুন্ডুল হয়েছে অধিবেশন।
গতকাল বৃহস্পতিবারও মনমোহনকে উদ্যেশ্য করে মোদির ‘পাক চক্রান্ত’র মন্তব্যকে ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। এমনকি কংগ্রেসের প্রবল হট্টগোলের কারণে গতকাল ‘খেলার অধিকার এবং ভারতে খেলার ভবিষ্যত’ নিয়ে সংসদে বক্তব্যই রাখতে পারেন নি রাজ্যসভার মনোনীত সাংসদ শচীন টেন্ডুলকার। বক্তব্য রাখতে উঠে টানা প্রায় ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকেন শচীন। এরপর শুক্রবার ফেসবুকে লাইভ সেই বক্তব্য রাখেন মাস্টার ব্লাস্টার। সংসদে দাঁড়িয়ে না বলতে পারার হতাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন ‘গতকাল আমি কিছু বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারি নি’। ভারতকে ‘স্পোর্টস-লাভিং’ দেশ থেকে ‘স্পোর্টস-প্লেয়িং’ দেশে পরিণত করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি। তরুণ সমাজ উন্নতশীল ভারতের কাছে ফিটনেস কতটা গুরুত্বপূর্ণ তারও ব্যাখ্যা দেন শচীন।