এপ্রিল ২৮, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় নির্বাচন প্রচ্ছদ রাজণীতি

ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলন লজ্জার-দুঃখের: ড. কামাল

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, যারা ভোটের অধিকারের জন্য এক হয়েছেন তাদের ভোটাধিকার থেকে যারা বঞ্চিত করতে চায় তারা পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খানের উত্তরসূরি। ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলন করতে যাওয়া লজ্জার ও দুঃখের বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আজ সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পেশাজীবীদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকে যারা আমরা ভোট দেওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের যারা সেই ভোট অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চায়। এরা স্বাধীনতার শত্রু নাকি। এরা হলো ইয়াহিয়া খানের উত্তরসূরি।

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর এসে ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, ‘আশ্চর্য ব্যাপার যে, আমাদের ভোট দেওয়ার ব্যাপারে ৪৭ বছর পরেও আমাদের আন্দোলন করে যেতে হবে ভোট দিতে। এর চেয়ে লজ্জার বিষয় কী হতে পারে। দুঃখের বিষয়, আজকে সেই কথা মনে করে কান্না পায়। ৪৭ বছর পরে সবাই মিলে আমরা আনন্দ করব, হাসতে হাসতে গিয়ে ভোটটা দেব। কিন্তু সেখানে আজকে এই ভোটকে কেন্দ্র করে কী পরিস্থিতি হচ্ছে।

পথে পথে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, ‘কারা এরা? স্বাধীনতাকে যারা শ্রদ্ধা করে না, বঙ্গবন্ধুকে যারা শ্রদ্ধা করে না, নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীনকে শ্রদ্ধা করে না, লাখো শহীদকে শ্রদ্ধা করে না। ভোটাধিকার তো তাদের অর্জন। ভোট দিয়ে স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে।

সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, শেখ হাসিনা শুধু প্রজাকে দিতেই চায়, প্রজার সুখেই তার সুখ।’ তাঁর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে কামাল হোসেন বলেন, ‘সরকারেরই একজন বলে ফেলল। আমি নামও নিতে চাই না। যাকে আমি ভালো জানতাম, সে বলছে প্রজা। স্বাধীন দেশের লোক প্রজা নয়, তারা নাগরিক। প্রজা হয় রাজতন্ত্র যেখানে থাকে। যারা আমাদের প্রজা মনে করছেন তাদের বলব, মাথা ঠিক করেন। আমরা প্রজা নয় আমরা নাগরিক। স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক।

কামাল হোসেন জানান, বাঙালি ভয় পায় না। তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ১৭ /১৮ কোটি মানুষকে মেরে ফেলা অসম্ভব। কয় লাখ লোককে মারতে পারবে। কাউকে মারতে পারবে না। এরা কাপুরুষ। যারা হুমকি দেয়, গুন্ডা-পাণ্ডা দিয়ে হামলা করে তারা কাপুরুষ। তারা এ দেশের শহীদদের অপমান করছে, বঙ্গবন্ধুকে অপমান করছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের অনুসারী হিসেবে পুলিশকে নিরীহ মানুষের ওপর হয়রানি না করার আহ্বান জানান এবং ৩০ তারিখ সবাই শক্ত মনোবল নিয়ে ভোট দিতে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যারা চলছেন অন্ধকারের দিকে তারা যাচ্ছেন। তিনি বলেন, মানুষ সেনাবাহিনীর কাছে নিরাপদে ভোট দিতে চায়। সেনাবাহিনী তাদের নীতিনৈতিকতা বজায় রাখলে ৩০ ডিসেম্বর ভোট বিপ্লব হবে। ১৫ বা ১৬ কোটি মানুষ ধানের শীষের পক্ষে।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা পুলিশের ওপর নির্ভর করে তারা কখনো রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী না। একটা দল কতটা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হলে সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের প্রচারে নামায়।

ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জনগণ এ স্বৈরাচারের পতন দেখতে চায়। এবারে ভোটের লড়াইয়ে জিততে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে।

আদালত ধানের শীষের বৈধ প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করে ওই আসনগুলো আওয়ামী লীগকে উপহার দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, বিএনপির ১৬ জন প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ভাবছে এই আসনগুলোতে তাদের জয়ের পথ সুগম হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়ায় ধানের শীষের প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে।

ধানের শীষের প্রার্থীরা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না দাবি করে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার হেরে যাওয়ার ভয়ে রিস্ক নিতে চায় না। নির্বাচন করতে দিতে চায় না। ধানের শীষের প্রার্থীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সরকারের এসব বাধায় আমরা বিচলিত নই।’

ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে দেওয়া একটি প্রতিশ্রুতিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রক্ষা করেননি বলে মন্তব্য করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হবেই। জনগণ বসে আছে, ভোটের দিন ফাইনাল খেলা হবে। বাংলার মানুষ গত ১০ বছরের দুঃশাসনের উত্তর দেওয়ার অপেক্ষায় আছে। এবার নৌকার ভরাডুবি হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তাফা মহসীন মন্টু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান, ড্যাব সভাপতি এ কে এম আজিজুল হক, ডিইউজে সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি সদরুল আমিন প্রমুখ।

সম্পর্কিত পোস্ট

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official