এপ্রিল ২৬, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় ঢাকা নির্বাচন প্রচ্ছদ রাজণীতি

মির্জা ফখরুলের কাপড় খুলে নিলেন মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীরা!

মনোনয়নের পেছনে বিস্তর টাকা পয়সা খরচা করে এবং দলীয় শীর্ষ নেতাদের চাহিদা মোতাবেক ডোনেশন দিয়েও বঞ্চিত হন বেশ কিছু প্রার্থী। সেই ক্ষোভে গত কয়েকদিন ধরে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা,ভাঙচুর, নেতাদেরকে লাঞ্ছিত করছেন বঞ্চিত প্রার্থীদের সমর্থকরা।

এরই মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িতেও হামলা হয়। গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে পরনের কাপড় ছিঁড়ে মির্জা ফখরুলকে লাঞ্ছিত করার খবর পাওয়া গেছে।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে মির্জা ফখরুলের গাড়িতে হামলা চালালে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায় এবং চালক হেলাল আহত হন।

ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে কাজী মনিরুজ্জামান মনিরকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দেয়ার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের সমর্থকরা। তৈমুর মনোনয়ন না পাওয়ায় তার সমর্থকরা চেয়ারপারসন কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে। এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িতেও তারা হামলা করে।

শনিবার রাত আড়াইটায় মির্জা ফখরুল গুলশানের চেয়ারপার্সনের কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় তার গাড়ি অবরুদ্ধ করা হয়। অনেকক্ষণ কার্যালয়ে অবরূদ্ধ থাকেন তিনি। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সাড়া না পেয়ে সুযোগ বুঝে বের হয়ে গাড়িতে ঢুকতে গেলেই অপেক্ষমান বিএনপি কর্মীরা তাকে ধরে ফেলে এবং লাঞ্ছিত করে। গাড়ি থেকে তাকে টেনে হিঁচড়ে বের করে শারীরিকভাবে আঘাত করা হয়। এতে তার শার্ট ছিঁড়ে যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় রাত ৩টার দিকে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাকর্মী দল- চেয়ারপার্সনস সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) একটি মানববেষ্টনী তৈরি করে তাকে ঘিরে গুলশান-২ নম্বর চত্বরের দিকে নিয়ে যান। সে সময় মির্জা ফখরুলের ব্যক্তিগত গাড়িটি কার্যালয় থেকে খালি বেরিয়ে মূল সড়ক থেকে ফখরুলকে তুলে নিয়ে যায়।

এর আগে সন্ধ্যা থেকে দেশের বিভিন্ন আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা আন্দোলন করে। মধ্যরাতে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে গেইট ভেঙে তারা কার্যালয়ের ভেতর প্রবেশের চেষ্টা করে। গেটের অপর পাশ থেকে সিএসএফের কর্মকর্তারা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

জানা গেছে, মনোনয়নবঞ্চিত এহছানুল হক মিলনের অনুসারীরা ফখরুলের পথ আটকে তাকে চারপাশ থেকে ঘিরে রাখেন। আর তাদের সঙ্গে যোগ দেন গোপালগঞ্জ-১ আসনের সেলিমুজ্জামান সেলিম ও মানিকগঞ্জে প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে অ্যাডভোকেট খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলুর কয়েক হাজার নেতাকর্মী। তারা গুলশান কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তাদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে কার্যালয়ের ২য় তলার জানালার কাঁচ ভেঙে যায়।

বাইরে যখন বিক্ষোভ চলছিল, সেসময় ভেতরেই ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খানসহ সিনিয়র কয়েক নেতা।

পরিস্থিতি শান্ত করতে দেলোয়ারের দুই ছেলে ও মেয়েকে কার্যালয়ের ভেতরে ডেকে নেয়া হয়। এ সময় নজরুল ইসলাম খান তাদের সঙ্গে কথা বলেন। দেলোয়ারের সন্তানরা নজরুল ইসলাম খানের কাছে জানতে চান, এ দলে কি তার বাবার কোনো অবদান নেই? মনোনয়ন তো দূরের কথা, তাদের কেন কার্যালয়ে ঢুকতে দেয়া হল না। এ সময় নজরুল ইসলাম খান তাদের শান্ত হতে বলেন। বাইরে বিক্ষুব্ধ কর্মীদের চলে যেতে বলেন। কার্যালয়ের নিচ তলায় তাদের অপেক্ষা করতে বলেন নজরুল।

এরপর তৈমুর আলম খন্দকারকে ভেতরে ডাকেন নজরুল ইসলাম খান। তার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় তৈমুর ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, আমি কার্যালয়ের বাইরে আছি। মহাসচিবসহ আপনারা কীভাবে বাইরে বের হন, তা আমি দেখে নেব। এ বলে তিনি নিচে চলে আসেন।

দুপুরে চাঁদপুর-১ আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এহছানুল হক মিলনের অনুসারীরা নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। মূল গেটে প্রতিবাদ মিছিল লেখা একটি ব্যানার টাঙিয়ে দেয়া হয়। এ সময় মিলনের স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবী ছাড়াও বিক্ষোভে অংশ নেন চাঁদপুরের কচুয়া থানা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

বেবী সাংবাদিকদের বলেন, বিগত সময়ে যারা দলের জন্য কাজ করেছেন, তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। এরপর প্রার্থী পরিবর্তনের জন্য ১২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে বিএনপির নেতা আ ন ম এহছানুল হক মিলনের অনুসারী নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন কার্যালয়ের ফটকের তালা খুলে দেন। এরপর তারা দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে দেখা করে তারা তাদের ক্ষোভের কথা জানান।

বিক্ষোভরত মিলনের একাধিক সমর্থক অভিযোগ করেন, এহছানুল হক মিলনের জায়গায় চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. মোশাররফ হোসেনকে এলাকায় কেউ চেনেন না। সারা জীবন তিনি মালয়েশিয়ায় ছিলেন। এহছানুল হক মিলন পাঁচ বছর দেশের বাইরে থাকলেও তার সঙ্গে এলাকার মানুষের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এখনও তিনি জেলে আছেন, তার ত্যাগকে মূল্যায়ন করা হয়নি।

মনোনয়নবঞ্চিতদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন,ধানের শীষ’ প্রতীকে যারা মনোনয়ন পাচ্ছেন, তাদের পক্ষেই নেতাকর্মীরা ‘একট্টা’। মনোনয়ন নিয়ে ছোটখাটো দুই-একটি প্রতিক্রিয়া- এটা কি নতুন কিছু? এটা নতুন নয়। বরং যাদের দেয়া হয়েছে, তারা অত্যন্ত জনপ্রিয় তাদের এলাকায়। আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে শুরু করে এলাকায় তাদের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত নিবিড়। যোগ্যদেরই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official