22 C
Dhaka
নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অর্থনীতি জাতীয় প্রচ্ছদ রাজণীতি

যে-ই ক্ষমতায় আসুক, উন্নয়নে বাধা দিতে পারবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী নির্বাচনে যে-ই ক্ষমতায় আসুক না কেন, কেউ দেশের উন্নয়নে বাধা দিতে পারবে না। বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াকে আর কেউ থামাতে পারবে না।

রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আজ রোববার সকালে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ২০১৫-১৬ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

আসন্ন নির্বাচনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘যদিও সময় এখন সীমিত। আগামীতে ইলেকশন, কী হবে বলতে পারি না! যতক্ষণ আছি ততক্ষণে যা যা প্রয়োজন সেটা করে দিতে পারব, সেইটুকু কথা দিতে পারি।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী ইলেকশনে কী হবে তা বলতে পারি না, তবে আমরা যে একটা সিস্টেম করে রেখেছি, এরপর যে-ই ক্ষমতায় আসুক না কেন, কেউ দেশের উন্নয়নে বাধা দিতে পারবে না। বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াকে আর কেউ থামাতে পারবে না।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের সুযোগ গ্রহণ করে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতি রপ্তানি বাণিজ্য জোরদার করার আহ্বান জানান।প্রধানমন্ত্রী বলেন,উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা যে সুযোগটা পেয়েছি,তাতে আমাদের ঋণ গ্রহণের সুবিধা হবে, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে বিশাল সুযোগ আমাদের সৃষ্টি হবে রপ্তানি বাণিজ্য করার, সেই সুযোগটা আমাদের গ্রহণ করতে হবে। আর তার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।শেখ হাসিনা বলেন,এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে অন্য যে সুযোগগুলো আমরা পাই সেগুলো হয়তো পাব না, তাতে আমাদের কোনো অসুবিধা হবে না।কারণ,সেভাবেই আমরা আমাদের নীতিমালাসহ সবকিছু প্রণয়ন করেছি।

দল-মতনির্বিশেষে তাঁর দরজা ব্যবসায়ীদের জন্য সব সময় খোলা, এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,আপনারা দেশ-বিদেশে ঘোরেন, আপনারাও খুঁজে বের করুন কোন দেশে আমাদের দেশের কোন কোন পণ্য রপ্তানি করা যায়।তিনি বলেন,বাজারকে খুঁজে নেওয়া এবং পণ্যটাকে তৈরি করা, সেটাও কিন্তু আপনাদের একটা দায়িত্ব। সেই ক্ষেত্রে যদি কোনো রকম সহযোগিতা লাগে,অবশ্যই সরকার হিসেবে আমরা তা করব।

রপ্তানি বাণিজ্য দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান নিয়ামক, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার অব্যাহতভাবে রপ্তানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, ‘২০০৫-০৬ সালে যেখানে রপ্তানি আয় ছিল ১০ দশমিক ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১৭-১৮ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৬ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।রপ্তানি খাতে গতিশীলতা আনয়ন ও রপ্তানি বাণিজ্যে আমাদের শিল্পকে প্রতিযোগিতা-সক্ষম করার লক্ষ্যে আমরা রপ্তানি নীতি ২০১৮-২১ প্রণয়ন করেছি, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শিল্পায়ন ছাড়া কোনো জাতির অর্থনৈতিক উন্নতি হয় না, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইপিজেড তৈরি করা হচ্ছে। সমগ্র বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে। ইপিজেড ও বিসিক স্টেটগুলোকে পুরোপুরি কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় বিসিক শিল্পনগরীগুলোতে রপ্তানিমুখী পণ্য উৎপাদনের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে ও মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গোটা বাংলাদেশ যাতে উন্নত হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কাজ করে যাচ্ছি। আমরা সব সময় চাই, আমাদের দেশটা এগিয়ে যাক।’ তাঁর সরকার ব্যবসাবান্ধব, তবে, নিজেরা ব্যবসায়ী নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সব সময়ই বলে এসেছি, আমার সরকার ব্যবসা করবে না। ব্যবসা করবেন ব্যবসায়ীগণ। আমরা সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করব। আমরা আপনাদের সৃজনশীল প্রয়াসে সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩৫টি পণ্যে ২ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা প্রদান এবং রপ্তানি শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার জন্য ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (ইডিএফ)’ সংস্থান করা হয়েছে। এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের টানা দুই মেয়াদে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে অনেকে আমাদের শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে, জিএসপি সুবিধা দিয়েছে। অন্তত আমি এইটুকু দাবি করতে পারি, যেখানেই আলাপ করেছি সাথে সাথে এই সুযোগগুলো পেয়ে গেছি।

বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনাকালে তিনি সব সময়ই দেশের পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার লাভের বিষয়টি তুলে ধরেন, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এর ফলে আমরা চিলি, ভারত, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে শুল্কমুক্ত পণ্যের প্রবেশাধিকার লাভ করেছি। জাপান ও রাশিয়ায় জিএসপি সুবিধার পরিধি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছি। বাজার বহুমুখী করার জন্য লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও মধ্য এশিয়ার দেশসমূহে রপ্তানি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছি।

দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলায় প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মেয়েরা তো এখন বেশি এগিয়ে এসেছে। তাই আরও ভালোভাবে শিক্ষিত করে, ট্রেনিং দিয়ে একটা শক্তিশালী জনগোষ্ঠী সৃষ্টি করে তাদের শ্রম ও মেধা কাজে লাগিয়ে দেশকে আরও উন্নত করতে পারব। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যা ছিল। ইতিমধ্যে আপনারা জানেন এলএনজি আমদানি শুরু করে দিয়েছি। ফ্লোটিং এলএনজি টার্মিনাল করা হয়েছে। কিন্তু আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি ল্যান্ড বেইজ এলএনজি টার্মিনাল করব। যাতে গ্যাসের আর কোনো সমস্যা কোথাও না থাকে। যাতে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও সুবিধা হয়।’

শেখ হাসিনা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের খণ্ডচিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘আমি শুধু এইটুকুই বলব, আজকে আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট মজবুত। আমাদের যে উন্নয়ন প্রকল্প তার ৯০ ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা অর্জন করেছি এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। উন্নত দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০২১, ২০৪১ এবং ২১০০ ডেলটা প্ল্যান হাতে নিয়েছি। এই ডেলটা প্ল্যান নেদারল্যান্ডস সরকারের সাথে যৌথভাবে বাস্তবায়ন করব, যার ফলে বাংলাদেশের এই এগিয়ে যাওয়া আর কেউ থামাতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সভাপতিত্ব করেন। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিজুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।

অনুষ্ঠানে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য ও খাতভিত্তিক সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের জন্য ৫৬টি প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় রপ্তানি ট্রফি’ প্রদান করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

কুরআনের আয়াত পোস্টের সঙ্গে ২ ছবি শেয়ার, কী বার্তা দিলেন আসিফ নজরুল

banglarmukh official

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্মান জানানোয় গোটা জাতি আনন্দিত

banglarmukh official

অবরুদ্ধ পেট্রোবাংলা, ভেতরে আটকা শত শত কর্মকর্তা

banglarmukh official

তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে যা বলল যুক্তরাজ্য

banglarmukh official

ইতিহাসে অবিস্মরণীয় নাম মাওলানা ভাসানী: তারেক রহমান

banglarmukh official

গরুর মাংসের দাম এখনও নাগালের বাইরে: ফরিদা আখতার

banglarmukh official