পঞ্চম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে গণধর্ষন শেষে মারধরের পর উলঙ্গ ভিডিও ধারন করে তা ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে, মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার পলাতক আসামি প্রভাবশালী ইউপি সদস্য শামীম তালুকদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার সেরাল গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সূত্রমতে, উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের কান্দিরপাড় গ্রামের কুয়েত প্রবাসীর কন্যা ও স্কুল ছাত্রী (১৪) তার প্রতিবেশী চাচাতো ভাই সম্পর্কের লিমন সরদার, নয়ন হাওলাদার ও ফেরদৌস হাওলাদারের সাথে নৌকাযোগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে পাশ্ববর্তী বিলে শাপলা তুলতে যায়।
তারা চৌদ্দমেদা বিলের সেলিমের ভিটা নামকস্থানে পৌঁছলে চেঙ্গুটিয়া গ্রামের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মুন্না তালুকদার, প্রভাবশালী ইউপি সদস্য শামীম তালুকদার, তাদের সহযোগী মাইনউদ্দিন সরদার, মিজানুর রহমান সরদার, আকবর আলী সরদার ও মিলন হাওলাদার অন্য একটি নৌকা নিয়ে স্কুল ছাত্রীসহ তার সাথে ঘুরতে যাওয়া তিনবন্ধুকে জোরপূর্বক বিলের মধ্যের নির্জন সেলিমের ভিটার নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্কুল ছাত্রীসহ ওই তিন বন্ধুকে বেদম মারধর করে চারজনকেই উলঙ্গ করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারন করা হয়। পরে মাদক ব্যবসায়ীরা ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে। বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য ছাত্রীর চাচাতো ভাই নয়নকে দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করিয়ে সেইদৃশ্যও ভিডিও ধারন করা হয়। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে তিন বন্ধু ও স্কুল ছাত্রীর পরিবারের কাছ থেকে মাদক ব্যবসায়ীরা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
মাদক ব্যবসায়ীদের মারধরে গুরুতর আহত ফেরদৌস দীর্ঘদিন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো। আগৈলঝাড়া থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ ঘটনায় ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রী বাদি হয়ে গণধর্ষণ, ভিডিও ধারন ও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ইউপি সদস্য শামীম তালুকদার, মুন্না তালুকদারসহ আটজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন (যার নং-১০/২৭-৯-১৭)। গত ৩০ সেপ্টেম্বর চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) আব্দুর রহমান অভিযান চালিয়ে আত্মগোপনে থাকা মামলার প্রধান আসামি মুন্না তালুকদারকে ধানডোবা গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেন।
পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পলাতক আসামি ইউপি সদস্য শামীম তালুকদারকে সেরাল গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছেন। বুধবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
মামলার বাদি ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রী জানায়, মামলা প্রত্যাহারের জন্য আসামিদের স্বজনরা তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। এ জন্য তারা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন।