এপ্রিল ২৩, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ জেলার সংবাদ বরিশাল শিক্ষাঙ্গন

এইচএসসিতে ফেল করা তাহিরা মার্কশিট তুলে অবাক

বরগুনা সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী তাহিরা খানম বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০১৯ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। গত ১৭ জুলাই বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি’র ফলাফল প্রকাশিত হয়।

ওইদিন দুপুরে সরকারি মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানি টেলিটকে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে তাহিরা জানতে পারেন তিনি জীববিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিতসহ ৩টি বিষয়ে ফেল করেছেন। প্রায় ৪ মাস পর এইচএসসি’র মার্কশিট উত্তোলন করে তাহিরা দেখতে পান তিনি কোনো বিষয়েই ফেল করেননি। তিনি জিপিএ-৩.৮৩ (এ-) পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

আগামী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে গত ১৭ ডিসেম্বর বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পুনরায় ফরম পূরণ করেন তাহিরা। এসময় কৌতুহলী হয়ে মার্কশিট উত্তোলন করে দেখতে পান জিপিএ-৩.৮৩ (এ-) পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ফলাফলের বিষয়টি নিশ্চিত হতে গত ২২ ডিসেম্বর বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে তাহিরার ভাই ইমন তার বোনের ফল ফের পর্যালোচনা বা খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেন।

চেয়ারম্যান তার রোল নম্বর নিয়ে তার নিজের মুঠোফোনে সার্চ দিয়ে তাহিরা ফেল করেছেন বলে জানান। এ সময় তাহিরার ভাই ইমন বোর্ডের মার্কশিটে উত্তীর্ণ হওয়ার প্রমাণ দেখালে চেয়ারম্যান বোর্ডের সিস্টেম এ্যানালিস্টকে ডেকে পাঠান। তিনি নিজেদের কিছু ভুলত্রুটির কথা জানান চেয়ারম্যানকে। এ সময় চেয়ারম্যান পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে ভুল সংশোধন করে দেয়া হয়েছে বলে ইমনকে জানান। ওই সময়েও টেলিটকের ক্ষুদে বার্তায় তাহিরাকে ফেল দেখানোয় এ ভুলের দায় টেলিটকের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেন বোর্ড চেয়ারম্যান। শেষ পর্যন্ত বোর্ড কর্তৃপক্ষের কোনো সদুত্তর না পেয়ে অফিস ত্যাগ করেন ইমন।

ভুক্তভোগী তাহিরা খানম পাথরঘাটা পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জাকির হোসেন খান ও সেলিনা খানম দম্পতির কন্যা সন্তান ও বরগুনা সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী।

তাহিরা খানম জানান, টেলিটকের ক্ষুদে বার্তা দেখে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। কিন্ত এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভুল হতে পারে তা ভাবা যায় না-মানাও যায় না। তাহিরা খানম জানান, এইচএসসি ফলাফল প্রকাশের আগে বাবা-মা তাদের পছন্দের পাত্রের কাছে আমাকে বিয়ে দেন। বোর্ডের ফলে ফেল দেখানোয় শ্বশুর বাড়িসহ নিজের পাড়া মহল্লা এবং সহপাঠী মহলে নানা তিরস্কারের শিকার হতে হয়েছে। বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ফল বিভ্রাটের কারণে শিক্ষা জীবন থেকে হারিয়ে গেছে মূল্যবান একটি বছর। এইচএসসির ফল প্রকাশের দিন থেকে আমার জীবনে হতাশা ছেয়ে গেছে।

তাহিরার বড় ভাই ফেরদৌস খান ইমন জানান, আগামী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে গত ১৭ ডিসেম্বর প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ করে আবারও বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ফরম পূরণ করে তাহিরা। ওই দিনই কলেজ থেকে ২০১৯ সালের এইচএসসির মার্কশিট (ট্রান্সক্রিপ্ট) উত্তোলন করে তাহিরা দেখতে পায় কোনো বিষয়েই সে ফেল করেনি।

বরগুনা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুস সালাম বলেন, ফল প্রকাশের সময় তাহিরাকে ফেল দেখানো হয়েছিল। পরে মার্কশিটে দেখছি সে উত্তীর্ণ হয়েছে। বিষয়টি কেন কীভাবে ঘটলো তা কলেজ কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে না। এটা বোর্ডের বিষয়। বোর্ডই বিষয়টির উত্তর দিতে পারবে।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আনোয়ারুল আজিম বলেন, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। ফল ঘোষণার ১৫ দিন পর ফের ফল সংশোধন করে দেয়া হয়েছে। তখন তাহিরা আবেদন করলে যাচাই-বাছাই করে সংশোধন করে দেয়া হতো।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস বলেন, টেলিটকের প্রকাশিত ফলে ভুল ছিল। পরে সংশোধন করে রেজাল্ট দেয়া হয়। এছাড়া ওই শিক্ষার্থী অন্য জায়গা থেকে ট্রান্সফার হয়ে এসেছিল। এজন্য কিছু তথ্য বিভ্রাট হয়েছে। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী কিংবা তার পরিবারও উদাসীন। তারা কোনোদিন কলেজে গিয়ে খোঁজ নেয়নি। এমনকি কলেজ কর্তৃপক্ষও ওই ছাত্রীর পরিবারকে বিষয়টি অবহিত করেনি। ছাত্রীর পরিবার আগে যোগাযোগ করলে এমনটা হতোনা বলে মন্তব্য করেন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস ।

সম্পর্কিত পোস্ট

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় মামুনুল-হাসনাত-সারজিস

banglarmukh official

বরিশালে দুর্ঘটনায় নিহত ২

banglarmukh official

অটোরিকশায় ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ, ভিডিও ভাইরাল

banglarmukh official