নিজস্ব প্রতিবেদক ::: ঝালকাঠির রাজাপুরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষপান করে নাইম (২৩) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে বিষপানের আগে নাইম তার ব্যবহৃত রোহান মৃধা নামে ফেসবুক আইডিতে লেখেন, আমি একটা জবানবন্দি দিছিলাম সাংবাদিকদের কাছে। ওইটা যখন দিয়েছিলাম তখন আমি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলাম। ওই ভিডিও রেকর্ড সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার মৃত্যুতে যদি কোনো কেস হয় তাহলে আমি চাই কেসটা আমার নামে হোক।
কিছুক্ষণ পর আরেকটি পোস্ট দিয়ে লেখেন, সম্ভব হইলে সবাই আমাকে মাফ কইরা দিয়েন। আমিও বাঁচতে চাইছিলাম, কিন্তু আমি অনেক ক্লান্ত, আর সম্ভব না বাঁচা। রোহান মৃধা নামের ফেসবুক আইডিটি নাইমের বলে নিশ্চিত করেছেন নাইমের চাচাতো ভাই ইসমাইল মৃধা।
নাইম উপজেলার বারবাকপুর এলাকার ছিদ্দিক মৃধার ছেলে। তিনি শুত্রুবার রাতে বিষপান করলে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাইমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে মৃত্যু হয় নাইমের।
নাইমের বাবা ছিদ্দিক মৃধা বলেন, গত বুধবার রাতে ফারুক হাওলাদারের মেয়ে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে নাইমকে তার কাছে যেতে বলে। সেখানে গেলে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে ফারুক ও তার ছেলে নাইমকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে এবং আমার ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে লোকজন নাইমকে নিয়ে নানা রকম কথা বলে। সেই অপমান সইতে না পেরে আমার ছেলে শুত্রুবার রাতে বিষপান করে। এ ঘটনার আমি বিচার চাই।
এ বিষয়ে ফারুক হাওলাদার বলেন, বুধবার রাতে নাইম আমাদের ঘরের জানালার পাশে আসে। টের পেয়ে আমার ছেলে ফয়সাল ঘরের বাইরে এসে নাইমকে এখানে আসার কারণ জানতে চেয়ে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে আঘাত করে। আমরা বাহিরে ডাক-চিৎকার শুনতে পেয়ে বাইরে এসে আমার ছেলেকে থামিয়ে দেই এবং নাইমের কাছে আমার মেয়েকে ডিস্টার্ব করার কারণ জানতে চাই। পরে নাইমের দুলাভাই ইকবালকে খবর দিলে সে এসেই কোনো কথা না শুনে আমাকে মারধর শুরু করে। এ ঘটনায় আমি বৃহস্পতিবার রাজাপুর থানায় অভিযোগ দেই।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. আতাউর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরদিন সন্ধ্যায় উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হলে নাইমের বাবা বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করবেন এবং পরবর্তীতে কোনো মামলা বা অভিযোগ দেবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়ে চলে যান। পরবর্তীতে জানতে পারি নাইম বিষপানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।