চলমান অস্থিরতার মধ্যে উত্তর কোরিয়া যদি যুক্তরাষ্ট্রে আগে হামলা চালায়, তাহলে বেইজিং নিরপেক্ষ থাকবে বলে চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র জানিয়েছে। উত্তর কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র যে মরণখেলা শুরু করতে যাচ্ছে তাতে চলমান পরিস্থিতি একটা যুদ্ধের দিকে ধাবিত হওয়ার আন্দাজ করে শুক্রবার ‘দ্য ন্যাশনালিস্টিক গ্লোবাল টাইমস’ ট্যাবলয়েডে লেখা সম্পাদকীয়তে এ ধরনের মন্তব্য করা হয়।
ওই সম্পাদকীয়তে আরও উল্লেখ করা হয়, চীনকে অবশ্যই এটা পরিষ্কার করতে হবে যে, যদি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র আগে আঘাত হানে এবং তারপর যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশোধ নেয়, তাহলে চীন নিরপক্ষে থাকবে।
তবে এ কথাও বলা হয়, যদি যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথভাবে উত্তর কোরিয়ার উপর আঘাত হানে এবং কোরীয় দ্বীপের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে দেয়ার চেষ্টা করে, তাহলে চীন তাদের বাধা দেবে।
সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে হামলা চালানোর হুমকির মধ্যেই চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পত্রিকার সম্পাদকীয়তে এ ধরনের মন্তব্য করা হল।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটির অবস্থানস্থল প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়াম দ্বীপে চারটি মাঝারি ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। তবে চীনের দাবি, একমাত্র রাজনৈতিকভাবে আলোচনার মধ্য দিয়ে সংকটের সমাধান করা সম্ভব।
বেইজিং থেকে আল জাজিরার আদ্রিয়ান ব্রাউন জানান, সম্পাদকীয়তে কিন্তু বলা হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি কাউকে সঙ্গে নিয়ে কোরীয় দ্বীপে হামলা চালিয়ে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন করে দেয়, তাহলে চীন চুপ করে বসে থাকবে না। কিন্তু বেইজিং ঠিক কী করবে তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার একমাত্র মিত্র রাষ্ট্র চীন। কিন্তু জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার কারণে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে রয়েছে বেইজিং। এতে করে বুঝতে কষ্ট হয় না, সীসা, লোহা, কয়লা এবং খাদ্যসামগ্রী উত্তর কোরিয়ায় রফতানি করবে না চীন।
তবে কিছুদিন আগে রয়টার্সের প্রতিনিধি উত্তর কোরিয়া ঘুরে যাওয়ার পর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, বাইরের দেশের ওপর নির্ভর না করে নিজেদের দেশেই খাদ্য থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদন করছে দেশটি। এতে করে চীন খাবারের প্রতি তাদের আর নির্ভরশীল থাকার কথা নয়।
সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় সফল হওয়ারও দাবি করেছে। গুয়াম দ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো রকেট ওই অঞ্চলে আঘাত হানতে মাত্র ১৪ মিনিট সময় লাগবে। একমাসের মধ্যেই সেই হামলা চালানোর কথা বলছে পিয়ংইয়ং। এখন দেখার বিষয় শেষাবধি কী ঘটে।
সূত্র : আল জাজিরা