শুক্রবার গণভবনে এক অনুষ্ঠানে ১৪ খণ্ডের এই সঙ্কলনের প্রথম খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি।
১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন তৈরি করত পাকিস্তানের ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চ(আইবি)।
দীর্ঘ ২৩ বছরের সেইসব গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৪ খণ্ডের এই সঙ্কলন প্রকাশ করছে হাক্কানী পাবলিশার্স।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে তার হাত ধরেই বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ।
তরুণ শেখ মুজিব নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে কেমন করে বাংলার অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হলেন- সেই পথচিত্র যেমন এই বইয়ে এসেছে, সেই সঙ্গে এসেছে বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে চলার মানচিত্র।
এসব কারণে ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই সঙ্কলনকে বিশেষজ্ঞরা বর্ণনা করছেন ‘অমূল্য সম্পদ’ হিসেবে।

১৪ খণ্ডের সঙ্কলনে ভাষা আন্দোলন, জমিদারি প্রথা বিলুপ্তকরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন, আওয়ামী লীগের জন্ম, শেখ মুজিবুর রহমানের চিঠিপত্র, বিভিন্ন লিফলেট বিতরণ, বক্তব্য-বিবৃতি, গ্রেপ্তার, কারাবরণ, কারাগারে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আত্মীয়-স্বজন ও নেতাকর্মীদের সাক্ষাতের বিষয়গুলো উঠে এসেছে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের বয়ানে।
ইংরেজি ভাষায় লেখা পুরনো এসব নথি দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) রেকর্ড রুমেই পড়ে ছিল অযত্ন আর অবহেলায়।
বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী এসবি প্রধানের দায়িত্বে থাকার সময় প্রধানমন্ত্রীর উৎসাহে সেসব নথি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন এবং ৬০৬-৪৮ ফাইল নম্বর দিয়ে বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে যেসব ক্লাসিফায়েড তথ্য সেখানে ছিল, সেগুলোর পাঠোদ্ধার ও সঙ্কলিত করার ব্যবস্থা করেন।
‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অফ দা নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ উৎসর্গ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধাদের উদ্দেশে।
৫৮২ পৃষ্ঠার প্রথম খণ্ডের দাম রাখা হয়েছে ৯০০ টাকা। একই নকশায় প্রতিটি খণ্ডের প্রচ্ছদ করেছেন সমর মজুমদার।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেমোরিয়াল ট্রাস্ট আয়োজিত প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠানে মঞ্চে ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, পুলিশ মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী, বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান, ট্রাস্টের সদস্য সচিব শেখ হাফিজুর রহমান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এবং হাক্কানী পাবলিশার্সের প্রকাশক গোলাম মোস্তফা।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, স্পিকার শিরীন শারিমন চৌধুরী এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদও ছিলেন অনুষ্ঠানে।
এছাড়া অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ আলী, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ও চার নির্বাচন কমিশনার, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, দেশি-বিদেশি অতিথি, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও নানা শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এই মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে।