20.3 C
Dhaka
নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় প্রচ্ছদ রাজণীতি

যে শোক চিরদিনের

হৃদয়ের স্মৃতিপটে শোকের বিচরণে ভিন্নতা থাকে। স্বজন হারানোর শোক, আর্তনাদ থাকে সময় ধরেও। সময় গড়িয়ে শোকের ছায়ায় আলোরও দেখা মেলে। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়ে জাতি যে শোকে মুহ্যমান, তা যেন অনন্তকালের। পিতা হারানোর এ শোক চিরদিনের।

আজ ১৫ আগস্ট। ইতিহাস এদিন থমকে দাঁড়ায়। নদী তার স্রোত হারায়। বনের পাখিরা নিস্তব্ধ হয়ে আরও নির্জনে চলে যায়। এদিন ভোরের সূর্য আরও রক্তিম হয়ে ওঠে। রাখালের বাঁশির সুরলহরি এদিন আরও করুণ হয়ে ওঠে।

নানা ঘটনাপ্রবাহ আর ব্যথাতুর স্মৃতিতে বাঙালি জীবনে আগস্টের গোটা মাস ভারি হলেও ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড বিশ্বমানবতাকে স্তম্ভিত করে দেয়। এদিন বাঙালি জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, বাংলাদেশের স্থপতি, মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ও বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা নির্মমভাবে হত্যা করেন।

বিশ্ব ইতিহাসের নির্মম ওই হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন আরও প্রাণ হরণ করা হয় বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, ভাই শেখ নাসের ও কর্নেল জামিলের।

ঘাতক সেনাদের বুলেটে আরও প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, শহীদ সেরনিয়াবাত, শিশু বাবু, আরিফ রিন্টু খান।

বর্বর ওই হত্যাকাণ্ডের দিন দেশে না থাকায় প্রাণে রক্ষা পান বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা। ওই সময় স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে জার্মানির কার্লসরুইয়ে সন্তানসহ অবস্থান করছিলেন শেখ হাসিনা। শেখ রেহানাও ছিলেন বড় বোনের সঙ্গে।

আগস্ট মানেই জাতির দীর্ঘশ্বাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ওই হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা পৃথিবীর যে কোনো হত্যাকাণ্ডকে হার মানায়। ঘটনার বর্ণনায় দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট খুনিও আঁতকে উঠবে। রাতের আঁধারে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে পৈশাচিক পন্থায় হামলা চালান দিকভ্রান্ত সেনা কর্মকর্তারা। বুলেটের আঘাতে রক্তগঙ্গা বয়ে যায় পুরো বাড়ি। ঝাঁঝরা হয়ে যায় দরজা, জানালা, বাড়ি ও দেয়াল। রক্তসাগরে যুবে ছিল লাশগুলো।

jagonews24

নিজের সৃষ্ট দেশে কোনো বাঙালি তার জীবনের হুমকি হতে পারে, কখনও ভাবেননি বঙ্গবন্ধু। এ কারণে বাড়তি নিরাপত্তার ধার ধারেননি তিনি। সুরক্ষিত রাষ্ট্রপতির বাসভবন ছেড়ে বসবাস করতেন প্রিয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে।

ওই বাড়িতেই ঘাতকের বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়ে পর্বতসম দেহ আর ইস্পাতসম মনোবল নিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘তোরা কী চাস আমার কাছে? কোথায় নিয়ে যাবি আমাকে?’

ঘাতকরা তাকে অন্য কোথাও নিয়ে যায়নি। বঙ্গবন্ধুকে তার প্রিয় বাড়িতেই বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা করে দেয়। নির্মম ওই হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশ যেন মেঘে ঢেকে যায়। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ যেন ‘খুনের বাংলায়’ পরিণত করে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করা হয়। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে খুনিদের দায়িত্ব দেয়া হয়।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক বিচারের হাত থেকে খুনিদের রক্ষা করতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটিকে আইন হিসেবে অনুমোদন দেন।

তবে শেষ রক্ষা হয়নি খুনিদের। ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি পাঁচ আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করে জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করা হয়। যদিও দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন আসামির সাজা এখনও কার্যকর করতে পারেনি সরকার।

সম্পর্কিত পোস্ট

কুরআনের আয়াত পোস্টের সঙ্গে ২ ছবি শেয়ার, কী বার্তা দিলেন আসিফ নজরুল

banglarmukh official

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্মান জানানোয় গোটা জাতি আনন্দিত

banglarmukh official

অবরুদ্ধ পেট্রোবাংলা, ভেতরে আটকা শত শত কর্মকর্তা

banglarmukh official

তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে যা বলল যুক্তরাজ্য

banglarmukh official

ইতিহাসে অবিস্মরণীয় নাম মাওলানা ভাসানী: তারেক রহমান

banglarmukh official

গরুর মাংসের দাম এখনও নাগালের বাইরে: ফরিদা আখতার

banglarmukh official