ভারতের উত্তরপ্রদেশে চলন্ত ট্রেন থেকে চার মেয়েকে ফেরে দিয়েছে এক বাবা। গত ২৩ অক্টোবর মধ্যরাতে কামাখ্যা-কাটারা এক্সপ্রেস থেকে ইদ্দু মিঞাঁ নামে এক ব্যক্তি তার পাঁচ মেয়ের মধ্যে চারজনকে ছুঁড়ে ফেলে দেন।
কপালজোরে বেঁচে যাওয়া চারজনের একজন আলগুনকে পাশে নিয়ে হাসপাতালে কাঁদতে কাঁদতে নিহত শিশুদের মা ৩৬ বছরের আফরীনা খাতুন পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘কন্যা-সন্তান জন্ম দেওয়ার মাসুল গুণলেন। ‘
ওই নারী জানান, লখনউ থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার উত্তরে সীতাপুর দিয়ে ট্রেনটি যখন যাচ্ছিল, সেই সময় ৪২ বছরের ইদ্দু এক-এক করে চার ময়েকে চলন্ত ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
আফরীন খাতুন বলেন, মুনিয়া (নিহত মেয়েদের একজন) আমার জন্য মারা গেল। তার দাবি, তিনি জানতেই পারেননি, কখন তার স্বামী শিশুদের ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। বলেন, শেহজাদী নামে এক মেয়েকে নিয়ে তিনি ঘুমাচ্ছিলেন।
আফরীন খাতুন আরও জানান, ঘুম ভাঙার পর, তিনি চারজনের খোঁজ করতে গিয়ে স্বামীকে প্রশ্ন করলে সে জবাব দেয়, ফেলে দিয়েছি। ইদ্দু যোগ করে, পাঁচ-পাঁচ মেয়েকে খাওয়াবে আর কে বিয়ে দেবে।
আফরীনের অভিযোগ, কাউকে কিছু বললে সে আমাকে ও শেহজাদীকেও ছুঁড়ে ফেলার হুমকি দেয়। ভয়ে কাউকে কিছুই জানাননি আফরীন।
তার দাবি, জম্মু পৌঁছে ইদ্দু তাদের দুজনকে ফেলে চলে যায়।
এদিকে, চলন্ত ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলার পরও কপালজোরে কোনও ক্রমে বেঁচে যায় আলগুন। টুকরো হয়ে যাওয়া পা নিয়ে তাকে সীতাপুরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৫ তারিখ লখিমপুর খেরির মৈগালগঞ্জ স্টেশনের কাছে রেললাইনের ওপর থেকে উদ্ধার করা হয় আলগুন খাতুনকে।
আফরীনা জানান, জম্মুতে কাজ করার জন্য বিহার স্ত্রী ও মেয়েদের ছাড়ে ইদ্দু। মেয়েদের নিয়ে আফরীন থেকে যান ঝাকরায়। তিনি বলেন, এবার জম্মু থেকে ফিরে স্ত্রী ও মেয়েদের নিয়ে যেতে চায় ইদ্দু।
তার আফশোস, তিনি যদি একবার টের পেতেন, তার স্বামীর মনে কী মারাত্মক পরিকল্পনা চলছে, তাহলে কখনই ট্রেনে উঠতেন না।