ক্রীড়া প্রতিবেদক : দুর্ভাগা বাংলাদেশ। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের ফেরে পড়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপে মূলপর্বের স্বপ্ন বিলীন হতে বসেছে! পুরো ম্যাচ ঠেকিয়ে ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে হেরে গেছে উজবেকিস্তানের সঙ্গে।
এই হারের জ্বালা তীরে এসে তরী ডোবার মতোই। গ্রুপে এখন ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশের রানার্স-আপ হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা কমে গেছে অনেকখানি। এখানেই বড় হয়ে ধরা পড়ছে স্বপ্নডুবির শঙ্কা।
ঠিক যেভাবে তাজিকিস্তানের সঙ্গে খেলেছিল, সেই কৌশলেই কাল বাংলাদেশ নেমেছিল উজবেকিস্তানের বিপক্ষে। সোজাসুজি ড্রয়ের লক্ষ্যে। এর চেয়ে বড় করে ভাবারও খুব সুযোগ নেই। কিন্তু সত্যি সত্যি একটা সুযোগ সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল ১০ মিনিটে। কাউন্টারে সুফিল উজবেক গোলরক্ষককে একা পেয়েও পারেননি বল জালে পাঠাতে। লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হওয়ার পর সবাই মিলে নেমেছিল গোল ঠেকানোর মিশনে।
সফলভাবে ঠেকিয়েছেও। বাংলাদেশ কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি বলেছেন, ‘তাজিকিস্তানের চেয়েও শক্তিশালী উজবেকিস্তান, ট্যাকটিক্যালি ও টেকনিক্যালি অনেক ভালো তারা। এর পরও আমাদের বিপক্ষে ওরকম ওপেন করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে একবার তারা ওপেন করেছে, কিন্তু গোল করতে পারেনি। পুরো ম্যাচ আমাদের ছেলেরা খুব ভালো খেলেছে, কৌশল অনুযায়ী পারফরম করেছে। উজবেকিস্তান আধিপত্য করলেও চাপে ফেলতে পারেনি। মাঝমাঠে আমাদের ব্লক ভালো হয়েছে। ডিফেন্সও খুব ভালো খেলেছে, তাই গোলের ক্লিয়ার চান্স পায়নি সেভাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ম্যাচ শেষের ৩০ সেকেন্ড আগে গোল খেয়ে সব কিছুই অর্থহীন হলে গেল। ’ ৪ মিনিট ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে শুধু গোলের দুর্ভাগ্য নয়, সেটাও হয়েছে আত্মঘাতী। একটা শট ঠেকাতে গিয়েছিলেন আতিকুজ্জামান, কিন্তু এতক্ষণ ভালো খেলা এই ডিফেন্ডারের বাঁ পায়ে লেগে বল ঢুকে গেছে বাংলাদেশের জালে। ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করারও সুযোগ নেই আর!
গোলের পরপরই বাঁজে শেষ বাঁশি আর হতাশায় ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। বাংলাদেশ কোচের কণ্ঠেও প্রকট হয়ে ধরা পড়েছে এমন হারের আক্ষেপ, ‘নেহাৎ ভাগ্যটা খারাপ বলেই আমরা হেরে গেলাম। তাতে মূলপর্বে যাওয়া কঠিন হয়ে গেল। শেষ ম্যাচে তাজিকিস্তানকে হারতে হবে বেশি গোলে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততে হবে বড় ব্যবধানে। আসলে অনেক হিসাব-নিকাশ সামনে চলে আসবে। এই ম্যাচটা ড্র করতে পারলে আমাদের ভালো সুযোগ ছিল। ’ ম্যাচটা ড্র হলে মূলপর্বে যেতে সেরা পাঁচ রানার্স-আপে থাকার ভালো সম্ভাবনা থাকত। তখন কাল শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারালে এবং উজবেকিস্তানের কাছে তাজিকিস্তান হারলে স্বপ্নপূরণের পথেই থাকত বাংলাদেশ। এখন বেঁচে আছে কেবল গাণিতিক সম্ভাবনা, যা বাস্তবে মেলানো কঠিনই।