শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের আয় কমেছে। তবে অস্থাবর ও স্থাবর সম্পদ বেড়েছে। তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদও বেড়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামা এবং নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা ঘেঁটে এ তথ্য জানা গেছে। নুরুল ইসলাম নাহিদ সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নাহিদের জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, তাঁর পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন রাজনৈতিক কর্মী। তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ১৭ লাখ ৭২ হাজার ৩০০ টাকা। এ আয়ের মধ্যে কৃষি খাত থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং পেশা থেকে ১৭ লাখ ২২ হাজার ৩০০ টাকা ছিল। তবে তাঁর স্ত্রীর কোনো আয় তিনি সেবার দেখাননি।
এবারের হলফনামায় দেখা যায়, এখনো পেশায় তিনি রাজনৈতিক কর্মী। এখন তাঁর বার্ষিক আয় ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২০৫ টাকা; যা গত ২০১৪ সালের তুলনায় ১ লাখ ৪২ হাজার ৯৫ টাকা কম। এবার দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী, তিনি কৃষি খাত থেকে ৫০ হাজার টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানতের সুদ বাবদ ৩ লাখ ২০ হাজার ২০৫ টাকা, পেশা থেকে ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা আয় করেন। এবারও তিনি তাঁর স্ত্রীর আয়ের কোনো হিসাব দেখাননি।
শিক্ষামন্ত্রীর আয় কমলেও অস্থাবর ও স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ঠিকই বেড়েছে। এবার জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি ১ কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ৯ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। ২০১৪ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পদ ছিল ৯৮ লাখ ৩০ হাজার ৫৫০ টাকার। সে হিসাবে এবার তাঁর অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৫৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪৫৯ টাকার। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নাহিদের অস্থাবর সম্পদ ছিল ২১ লাখ ৫৭ হাজার ৯১১ টাকার। সে তুলনায় বিগত ১০ বছরে তাঁর অস্থাবর সম্পদ বাড়ল ১ কোটি ৩৬ লাখ ৫৮ হাজার ৯৮ টাকার।
তিনটি হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নুরুল ইসলাম নাহিদের স্থাবর সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামায় তাঁর ৭২ লাখ ৭৮ হাজার ৪৩৮ টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে দেখা গেছে। ২০১৪ সালে এই সম্পদ ছিল ৬৯ লাখ ১৮ হাজার টাকার। সে হিসেবে গত পাঁচ বছরে তাঁর ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৩৮ টাকার স্থাবর সম্পদ বেড়েছে। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে তাঁর স্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল যৌথ মালিকানায় ৫ একর জমি ও ২ একর বাড়ি। এ ছাড়া তাঁর ব্যক্তিগত নামে তখন ছিল ৫ লাখ টাকার অকৃষিজমি।
২০১৪ সালে শিক্ষামন্ত্রী যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ভাইয়ের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এবারের হলফনামায় তাঁর কোনো ঋণ, দায় বা দেনা নেই বলে উল্লেখ করেছেন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও তাঁর কোনো দায় বা দেনা ছিল না।
সম্পদ বেড়েছে স্ত্রীর
শিক্ষামন্ত্রী একাদশ ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর স্ত্রী কিংবা নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় দেখাননি। তবে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ২ লাখ ৪ হাজার ১৭৪ টাকা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, তাঁর স্ত্রীর ৫৮ লাখ ১৭ হাজার ৩০ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। ২০১৪ সালে তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ছিল ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৮৪৩ টাকার। পাঁচ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৭ লাখ ৯৯ হাজার ১৮৭ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ছিল ৬ লাখ ৯ হাজার ৬৪৪ টাকা। গত ১০ বছরে বেড়েছে ৫২ লাখ ৭ হাজার ৩৮৬ টাকা।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শিক্ষামন্ত্রীর নির্ভরশীলদের নামে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল। তিনটি হলফনামাতেই শিক্ষামন্ত্রীর স্ত্রীর কোনো স্থাবর সম্পদের হিসাব ছিল না।