এপ্রিল ২৫, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ঢাকা নির্বাচন রাজণীতি

আওয়ামীলীগের বিজয় সমাবেশে যা বললেন প্রবীণ নেতারা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করায় শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিজয় সমাবেশ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দুপুর আড়াইটার দিকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিজয় সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। বিকেল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভোটের ১৯ দিন পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বিজয় সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতারা। সমাবেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের জন্য মানুষ অপেক্ষা করেছিল। এবার সংসদ হবে জামায়াত ও খুনিমুক্ত।

তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, ‘যারা খুনিদের সঙ্গে আঁতাত করেছিল, জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করেছিল; মানুষ তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশবাসী ১৯৭০ সালের মতো নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার দায়িত্ব দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শুধু বিজয়ীই হন নাই, নির্বাচনের দিন তিনি (বঙ্গবন্ধু) সাংবাদিকদের বলেছিলেন ‘‘আমি অবাক হব, যদি আমি দুটি আসনে হেরে যায়।’’ সত্যিই ওই দিন শুধু দুটি আসনেই তিনি হেরেছিলেন। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আমার আবার মনে হয়েছে বঙ্গবন্ধু আবারও আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন।’

প্রবীণ এ নেতা আরও বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বাংলার মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছে। গ্রামের মানুষ, মা-বোন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সারিবদ্ধভাবে ভোট দিয়েছে। জিজ্ঞেস করেছিলাম-মা কেন, আপনি ভোট দিতে এসেছেন? বলেছিলেন ‘‘শেখ হাসিনা আমাদের বয়স্ক ভাতাও দিচ্ছে।’’

বিজয়ের মাসে আরেক বিজয়
সমাবেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। বিগত ৩০ ডিসেম্বর প্রত্যেকটি জেলায় বাংলার মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয়ী হয়েছে। সেই বিজয় উপলক্ষে আজকের এ সমাবেশ। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের নির্যাতন-নিষ্পেষণের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক মুক্তির যে রায় নির্বাচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে দেয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করার সুযোগ না দিয়ে সেই বাংলার নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ত্রিশ লাখ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বিজয় অর্জন হয়েছিল। বিজয়ের মাসে আরেক বিজয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর অসামপ্ত কাজ অর্থনৈতিক মুক্তিকে তিনি (শেখ হাসিনা) সম্পন্ন করতে যাচ্ছেন।’

এ বিজয় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মানবতার বিজয়

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমি এ বিজয়কে অভিহিত করতে চায়, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের অদম্য আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে মানুষ শেখ হাসিনাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা যে দীর্ঘপথকে পাড়ি দিয়ে বাংলার মানুষকে আলোর দিন উপহার দিয়েছেন। এ বিজয়কে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মানবতার বিজয় বলে ঘোষণা করা যেতে পারে। বছরের প্রথম দিন যে গ্রামে গ্রামে শিশুদের মাঝে নতুন বই উপহার দেয়া হয়, এ বিজয় তার প্রতিফলন। কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবার বিনিময়ে এ বিজয়।’

বাংলার জনগণ শেখ হাসিনার ভালোবাসায় সিক্ত

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘যারা নির্বাচনে হেরে গেছে, যারা লড়াইয়ের মাঠে হেরে গেছে তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারে না। বাংলার জনগণ মনে করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন তারা।’

যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে তারা স্বাধীনতাবিরোধী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘যারা ৩০ ডিসেম্বরে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে, তারা কারা? তারা স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীর পক্ষ। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনাকারী, হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে দুর্নীতি ও লুটপাটকারী এবং দেশের টাকা বিদেশে পাচারকারী বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি জানাচ্ছি।’

নির্বাচনে বিজয় শেখ হাসিনার সততার বিজয়

যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের বড় বিজয় হলো শেখ হাসিনার সততার বিজয়। এ বিজয় শেখ হাসিনার উন্নয়নের বিজয়। ৩০ ডিসেম্বরের বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেই ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দিতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বিজয় সমাবেশের আলোচনা পর্ব যৌথভাবে সঞ্চালন করেন দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আরও বক্তব্য দেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মির্জা আজম, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার, ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন প্রমুখ।

এ বিজয় উৎসব ঘিরে সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লোকে লোকারণ্য এবং জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। উৎসবে যোগ দিতে বিকেলেও দেখা যায় জনস্রোত।

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৫৭টি আসনে জয় পায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করেছে দলটি। শেখ হাসিনা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

সোলাইমান সেলিম-জ্যোতি তিনদিনের রিমান্ডে

banglarmukh official

চাচা ডেকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী এনামুরকে বিয়ে করেন ফরিদা

banglarmukh official

কাদেরের কললিস্টে নায়িকা-নেত্রীদের তালিকা ভাইরাল

banglarmukh official

হিজবুত তাহরীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

banglarmukh official

স্ত্রী-কন্যাসহ খায়রুজ্জামান লিটনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

banglarmukh official