উড়োজাহাজে, ট্রেনে বা বাসে চড়ে ইচ্ছেমতো আসা-যাওয়া করা যায় কলকাতায়। কিন্তু নৌপথে পণ্য পরিবহন চললেও সাধারণ যাত্রীদের কলকাতা যাওয়ার সুযোগ ছিল না। এবার নৌপথের সেই বাধা দূর হচ্ছে। কাল শুক্রবার (২৯ মার্চ) পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে চালু হতে যাচ্ছে নৌযান যাত্রীসেবা।
শুক্রবার রাত ৯টায় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ক্রুজ শিপ ‘এমভি মধুমতি’ ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করবে। একইদিন একই সময়ে ভারতের ক্রুজ শিপ ‘মেসার্স আরভি. বেঙ্গল গঙ্গা’ কলকাতা থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবে।
ক্রুজ শিপ যাত্রার ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে শুক্রবার বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জের পাগলাস্থ ভিআইপি ঘাটে (মেরিএন্ডারসন) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রধান অতিথি এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বিশেষ অতিথি থাকবেন।
জাহাজটি বরিশাল, বাগেরহাটের মংলা, সুন্দরবন, খুলনার আন্টিহারা- ভারতের হলদিয়া রুট হয়ে কলকাতায় যাবে।
সময় যত লাগবে : ঢাকা থেকে ২৯ মার্চ রাত ৯টায় রওনা দিয়ে চাঁদপুর হয়ে ৩০ মার্চ ভোরবেলা বরিশালে যাত্রা বিরতি করবে এমভি মধুমতি। সেখান থেকে বাগেরহাটের মংলায় কিছু সময় থামবে জাহাজটি। বাগেরহাট থেকে সুন্দরবনে ভেতরে যাবে এটি। সুন্দরবন ঘুরে মধুমতি জাহাজটি খুলনার কয়রার আন্টিহারার দিকে যাবে। সেখানে যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হবে। আন্টিহারা হয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় যাবে। হলদিয়া থেকে সরাসরি কলকাতা যাবে মধুমতি। সবশেষ গন্তব্য কলকাতা নৌবন্দরে পৌঁছাবে ৩১ মার্চ রোববার দুপুর ১২টার দিকে। রোববার কলকাতায় থেকে পরদিন ১ এপ্রিল ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে এমভি মধুমতি।
ঢাকা-কলকাতা যাতায়াতের ভাড়া : এমভি মধুমতিতে যাত্রী ধারণক্ষমতা প্রায় ছয়শ। এর মধ্যে কেবিনগুলোতে ১৩০ জন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন। বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছে, কেবিন ভাড়া ফ্যামিলি স্যুট (দুজন) ১৫০০০ টাকা, প্রথম শ্রেণি (যাত্রীপ্রতি) পাঁচ হাজার টাকা, ডিলাক্স শ্রেণি (দুজন) ১০ হাজার টাকা, ইকোনমি চেয়ার প্রতিটি দুই হাজার টাকা এবং সুলভ ও ডিলাক্স শ্রেণির যাত্রীপ্রতি ভাড়া রাখা হবে দেড় হাজার টাকা। জাহাজে প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, বিকেলের নাশতা, রাতের খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। তবে এসব খাবার যাত্রীদের কিনে খেতে হবে। এ ছাড়া ভিসাও যাত্রীদের নিজেদের উদ্যোগে নিতে হবে। ভিসায় কোন পথে যাত্রীরা যাবেন এবং কলকাতা হয়ে ফেরত আসবেন সে বিষয় উল্লেখ ঘোষণা থাকতে হবে।