অনলাইন ডেস্ক:
বৈশাখ আসতে এখনো সপ্তাহ দুই দেরি। তার আগেই রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীতে হঠাৎ কালবৈশাখী হানা দিয়েছে। এতে ভবন থেকে ইট ও গাছ ভেঙে পড়ে এক নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এরমধ্যে পুলিশ দুইজনের নাম পরিচয় জানাতে পারলেও এখনো আরেকজনের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি।
সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হঠাৎ করেই ঢাকার আকাশে জমতে থাকে মেঘমালা। সময় গড়ার সঙ্গে পুরো আকাশই ঢেকে যায় কালো মেঘে।
একপর্যায়ে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে শুরু হয় মেঘের গর্জন। তীব্র বাতাস কাঁপিয়ে তোলে চারপাশ। গাছেরা করতে থাকে এফোড়-ওফোড়। অবশেষে নামে বৃষ্টি। মিনিট ১৫’র বৃষ্টিতেই জবুথবু অবস্থা।
পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় পথচারীরা পড়েন বিপাকে। এ সময় অনেককেই কাক ভেজা হতে হয়েছে। ঝড়ো বাতাসের কারণে যে যার মতো নিরাপদ আশ্রয়েও অবস্থান নেন।
বৃষ্টিতে নিচু এলাকায় পানি জমতে দেখা গেছে। সড়কে স্থবির হয়ে পড়ে যানবাহন।
বিপরীতে বৈশাখী ঝড়ে বিপত্তির সঙ্গে মিলেছে স্বস্তিও।
রোববার দিনভরই ভ্যাপসা গরম ছিল। বৃষ্টিতে তা ক্ষণিকের জন্য হলেও কমে গেছে। আবার বাতাসের তীব্রতা কমে এলে ইচ্ছে করে অনেককেই বৃষ্টির পানিতে ভিজতে দেখা গেছে।
মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখীতে রাজধানীর পুরান পল্টন মোড়ে ভবন থেকে ইট পড়ে মোহাম্মদ হানিফ নামে (৫০) এক চা বিক্রেতার মৃত্যু হয়েছে।
হানিফের গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ থানা উলানিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত আবদুল লতিফ।
তিনি দক্ষিণ মুগদায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন হানিফ।
প্রায় একই সময় সংসদ ভবন এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে মিলি ডি কস্তা (৬০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি পাশের মনিপুরি পাড়ায় থাকতেন।
ধারণা করা হচ্ছে তিনি সান্ধ্যকালীন হাঁটাহাটি করছিলেন।
এদিকে ঝড়ের সময় মিরপুর পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের তৃতীয় তলার ওয়াল ভেঙে নিচে পড়ায় এক চালকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান মিরপুর থানার ওসি।
শুধু রাজধানীতে নয়, এদিন বিকেলে দেশের বিভিন্ন স্থানেও ঝড় ও বৃষ্টি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত জেলাগুলো থেকে হতাহতের কোনো খবর আসেনি।
এদিকে, রোববার আবহাওয়া অফিস তাদের পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলেছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং সিলেট অঞ্চল এলাকার নদীবন্দরকে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্যত্র পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।