জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪২ তম আবর্তনের ছাত্র ও শাখা ছাত্রলীগের কর্মী শরীফ হোসেন লস্কর এবং তার পিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিসের কর্মচারী মোক্তার হোসেনকে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাঙামাটি এলাকায় বুধবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
আহত মোক্তার হোসেন বর্তমানে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মাদক কেনাবেচা নিয়ে বনিবনা না হওয়াতেই এ ধরণের ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনায় লিখিত প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়ন।
কর্মচারী সমিতির সভাপতি অমর চাঁদ মন্ডল বলেন, “ ২ ডিসেম্বরের মধ্যে ঘটনার তদন্ত এবং সুষ্ঠু সমাধান না হলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবো। ”
অনুসন্ধানে জানা যায়, লস্কর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সরবরাহকারী চক্রের একজন সদস্য ও শাখা ছাত্রলীগের কর্মী। শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের নির্দেশে কতিপয় ছাত্রলীগ কর্মী লস্করকে মারধর করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
ছাত্রলীগকর্মী নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪২ তম আবর্তনের রবিউল ইসলাম, ৪৩ তম আবর্তনের শাওন (আইআইটি), আরিফুল ইসলাম (বাংলা), সৈয়দ লায়েব (দর্শন), জুনায়েদ (একাউন্টিং) ও আসিফ (প্রত্নতত্ত্ব) লস্করকে তার নিজ বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী এলাকা রাঙামাটি থেকে ডেকে নিয়ে এসে মারধর করে।
লস্করের বাড়িতে মারধরের খবর পৌঁছালে তার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ অফিসের সিনিয়র বাস কনডাক্টর মোক্তার হোসেন ও তার স্ত্রী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাদেরকেও মারধর করা হয়।
অভিযুক্তদের কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, “মাদক বিক্রয়কালে তাকে হাতেনাতে ধরে মারধর করা হয়েছে।
তবে তার পরিবারকে মারধর করা হয়নি। একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। ”
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আবু সুফিয়ান চঞ্চল মারধরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “মাদকের বনিবনার বিষয়টি ভিত্তিহীন। তবে লস্কর আগে থেকে মাদকের সাথে সম্পৃক্ত। আর যারা ওখানে গিয়েছিলো তাদের সাথে তার আক্রমণাত্মক কোনো কথাবার্তার কারণে মারধরের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ”
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় লস্কর ইতোপূর্বে ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক দুই বছরের জন্য বহিস্কৃত হয়।