বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এসএম ইমামুল হকের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এছাড়া দুপুর দেড়টার দিকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে গণস্বাক্ষর নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করা হয়। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মচারীরা এখন এক দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। তা হলো ভিসির পদত্যাগ।
ভিসি স্বৈরাচার এবং নিপীড়নকারী উল্লেখ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ভিসি পদত্যাগ করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। ভিসি পদত্যাগ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বলেন, উপাচার্য আমাদের আন্দোলন দমিয়ে দিতে এরই মধ্যে নানা কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে এতে আন্দোলনে কোনো প্রভাব পড়েনি। উল্টো এ ঘটনার পর আন্দোলন বেগবান হয়েছে। ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীরা ২৯তম দিনের মতো আন্দোলন করে আসছে। আন্দোলন প্রত্যাহারের একটাই পথ- সেটি হলো উপাচার্যের পদত্যাগ। বিকল্প কোনো পথ নেই।
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলেন উপাচার্য। তার ওই বক্তব্যের পর ২৮ মার্চ থেকে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন তারা। একই দিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্লাস-পরীক্ষা এবং আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করে।
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে ওইদিনই তার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। উপাচার্য ২৯ মার্চ তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিলেও তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। তারা তার পদত্যাগের দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মশাল মিছিল, রক্ত দিয়ে দেয়াল লিখন, প্রতীকী অনশন, কালো কাপড়ে মুখে বেঁধে বিক্ষোভ এমনকি মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের চলমান আন্দোলনের মুখে উপাচার্য ইমামুল হক গত বৃহস্পতিবার ১৫ দিনের ছুটির জন্য আবেদন করেছেন।