23 C
Dhaka
নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অন্যান্য প্রচ্ছদ লেখার কিছু

কবি ও কথা সাহিত্যিক শফিক আমিন এর ধারাবাহিক উপন্যাস

“ভাঙ্গন” (পর্ব -১)

এক রাইতে দুইটা গ্রামের এক ফোটা মাটিও অবশিষ্ট রাহে নাই রাক্ষুসী মেঘনা । মেবুলার ঠিক মনে আছে, আষাঢ় মাসের চৌদ্দ শেষে পনের শুরুর রাইতে মুশলধারে বৃষ্টি । তখনও তাদের বাড়ি থেইকা নদী অনেক দূরের পথ । চৈত্র মাসে নদীত গোসল কইরা বাড়ি আইতে আইতে পরনে ভিজা কাপড় শুকাইয়া যাইত । হেই নদীডা কুমিরের লাহান অমন হা কইরা বইসা ছিল কে জানতো? রইস মেগবান গোসলের আগে নদীত জাল ঝাপাইয়া মাছ নিয়া বাড়িত আইত ।

আগের দিনের তো কতাই নাই, সে সময় জাল নিয়া নদীত দু’তিনটা ঝাপ দিলেই বড় বড় বাইলা আর চিংড়ি মাছে খারই প্রায় উতরাইয়া যাইত । এহনকার দিনে অবশ্য সেইরাম মাছ নাই । আর থাকলেই বা কি হইবো মাছ ধরবার মানুষ কৈ ? গেদার বাহে তো হেই রাইতেই আইজ্জা গেছে ! তুফানে যহন গোয়াল ঘরডা লইয়া যাওন বাযাইছে তহন গেদার বাহে কাঁচি লইয়া বাইর অইছে গরুর গলাত তোন দড়ি কাইট্টা দিবার নাম কইরা, আর ফেরে নাই । হেই গোয়াল ঘর আছিল থাহোনের ঘর থেইকা একটু দূরে । গেদার বাহে দড়ি কাটতে পারছিল কিনা জানিনা, তয় হেই রাইতে নদী ভাঙ্গনের লগে পাল্লা দিয়া গেদারে লইয়া আমি যহন দৌড়াইতে ছিলম তহন দেখছি হালের বলদ দুইডা আমার আগে আগে দৌড়াইতে আছিল ।

গলাপানি গ্রামে গিয়া যহন পৌঁছাইছি তহন রাইত প্রায় শ্যাষ অইয়া গেছিল । আমার পিছনে ফালাইয়া আছি মাইদাল গ্রাম । হেই গ্রামেই আমাগোর বাড়ি আছিল । তহন পিছন ফিরা দেহি তামাম গ্রামের কোতাও কোনও চিহ্ন নাই, খালি পানির মাতং । মনে হইতে ছিল পানিরা মাটি লুটের উৎসব করতেছে । কি ছোড গাছ আর কি বড় গাছ, কোনডা বারি, কোনডা ভিডা আর কোনডা ভূঁই হেইয়া দেহনের সময় নাই, খালি ঝাপ্পাত, ছপ্পাত আর ভজভজ কইরা শব্দ অইয়াই পানির লগে মিয়াইয়া যাইত । গেদার বাপেরে আমি কোনও সময় নাম ধইরা ডাহি নাই, হেদিন ডাকছি । কিন্তু কোনও রাও করে নাই ! সকাল অইছে কবিরাজ সুখলাল বাড়ৈর ঘরের ছাইছে খারাইয়া । গেদাডারে কোনও মতে ঘরের পিড়ার উপরে শোয়াইয়া রাখছি ।

পোলাডার হে কি ঘুম ! শিতে যেনও তারে দেহে নাই, আমার যে কি অইছিল মনে নাই । কোনও শিত বা গরম কিছুই জ্ঞান করি নাই । আমার পিছনে হালের বলদ দুইডা । কবিরাজের খ্যাড়ের কিনারে খারাইয়া রইছে, খ্যাড় খায়না । বলদ দুইডার লগে দুইডা দুধের গরুও আছিল । দুইডা গাইয়ের লগে আবার দুইডা বাছুর, দেহার মতন রঙ আছিল বাছুর দুইডার । একটা লাল আর একটা সাদা । সাদাডা পুরুষ আর লালডা মাইয়া বাছুর আছিল । হেগো রঙ দেখলেই কওন যাইত কোনডা বেডা আর কোনডা মাতারি । (চলবে)

সম্পর্কিত পোস্ট

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্মান জানানোয় গোটা জাতি আনন্দিত

banglarmukh official

ধ্বংসাত্মক মানসিকতার কারণে সভ্যতা গুরুতর ঝুঁকির মুখে: ড. ইউনূস

banglarmukh official

উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ানোর কারণ জানালেন রিজওয়ানা

banglarmukh official

সেই মুনতাহার লাশ মিলল নিজ বাড়ির পুকুরে

banglarmukh official

আসিফ নজরুলকে হেনস্তা, যা খতিয়ে দেখতে বললেন রাষ্ট্রদূত আনসারী

banglarmukh official

আমরা একে অপরের ভাই, কেন দ্বন্দ্বে জড়াবো: আদালতে আমু

banglarmukh official