27 C
Dhaka
অক্টোবর ৩১, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অর্থনীতি জাতীয় রাজণীতি শিক্ষাঙ্গন

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান রাখার ঘোষণা

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ থাকায় বাজেটের এই অংশটি পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দীর্ঘ প্রায় নয় বছর বন্ধ থাকার পর আবার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে বলা যায়, শিক্ষকদের জন্য সুখবর। দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর বন্ধ থাকার পর আবার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষার উন্নয়নে প্রয়োজনে বিদেশ থেকে শিক্ষক আনার কথা বলা হয়েছে। ২৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে দায়িত্ব দিয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে যুক্ত করে ২০১৯-২০ অর্থবছরের শিক্ষা বাজেটে মোট ৮৭ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে যা মোট বাজেট বরাদ্দের দশমিক ৭৫ শতাংশ। এটা জিডিপির ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। এটি এখন পর্যন্ত বাজেটে শিক্ষায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা।

এ বছর শিক্ষা বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় মানসম্মত শিক্ষার বিষয়ে। এ বিষয়ে জাপানের সম্রাট মেইজির উদাহরণ টেনে অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, মেইজির সময়ে জাপান শিক্ষায় অনগ্রসর ছিল। তখন তিনি অনুধাবন করেন জাপানে ছাত্রের অভাব নেই, আছে উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব। তাই তিনি প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষিত কয়েক হাজার শিক্ষককে জাপান নিয়ে আসেন। এভাবে জাপান জ্ঞানবিজ্ঞান অগ্রসর হয় এবং পাশ্চাত্যের দেশগুলোকেও জাপান ছাড়িয়ে যায়।

২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত শিক্ষা বাজেটে উপযুক্ত শিক্ষক বাছাই ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে শ্রেণিকক্ষ তৈরি করার বিষয়েও জোর দেওয়া হয়। ন্যানো টেকনোলজি, রোবটিক্স, ব্লকচেইন ম্যানেজমেন্ট ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের বিষয়ে জোর দেওয়ার কথাও জানানো হয়। সেই লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল প্রাথমিক শিক্ষা’ নামে একটি পাইলট প্রকল্পের কথা জানানো হয়।

এতে ৫০৩টি মডেল বিদ্যালয়ে ইন্টার‍্যাক্টিভ ক্লাসরুম তৈরি হবে। ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন প্রণয়ন, নতুন জাতীয়করণকৃত ও বিদ্যমান বিদ্যালয়গুলোতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অবকাঠামো উন্নয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। এ ছাড়াও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে ৫ বছর মেয়াদী শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি প্রস্তাব করা হয় যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত বিষয়ে জোর দেওয়ার কথা জানানো হয়।

কারিগরি শিক্ষার অগ্রগতির জন্য প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ২ হাজার ২৮১ কোটি টাকা ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুলের প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া ভূমি জরিপ, শিক্ষা উন্নয়ন, ২৩টি জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরাধীন ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়।

কারিগরি শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে চারটি বিভাগীয় শহর সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও রংপুরে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়।

মাদ্রাসা শিক্ষায় এ বছর সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয় যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৫ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। এই অর্থ মাদ্রাসায় অবকাঠামো উন্নয়ন, পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও বৈষম্য দূরে ব্যবহারে ব্যয় হবে বলে জানানো হয়।

অন্যদিকে শিক্ষকদের জন্য সুখবর দেওয়া হয়েছে বাজেটে। আবার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে। এমপিওভুক্ত হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি মাসে বেতন-ভাতা বাবদ সরকারি অংশ (মূল বেতন ও কিছু ভাতা) পেয়ে থাকেন। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।

এরপর থেকেই এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন করে আসছেন। আন্দোলনের মুখে গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্তির জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ জারি করে। এরপর গত আগস্টে এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন নেওয়া হয়।

মোট ৯ হাজার ৬১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করে। যাচাইয়ে এমপিও নীতিমালার সব শর্ত পূরণ করে যোগ্য প্রতিষ্ঠান হয়েছে ২ হাজার ৭৬২টি। কিন্তু অর্থের অভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিতে পারছিল না। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে টাকা চাওয়া হয়। তাতে মোট ১ হাজার ২৪৭ কোটি টাকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে এমপিওভুক্তির ঘোষণা এলো।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কর্মকর্তারা জানান, এমপিও পায় না এমন সাধারণ স্কুল ও কলেজ আছে সারা দেশে ৭ হাজার ১৪২টি। তবে এমপিওর জন্য অনলাইনে আবেদন করেছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার। মাউশির এক হিসাবে দেখা গেছে, ৭ হাজার ১৪২টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে বার্ষিক দুই হাজার ১৮৪ কোটি ২৭ লাখ ৫২ হাজার ২৫০ টাকা দরকার।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো মাউশির এক হিসাবে বলা হয়েছে, প্রতিটি ডিগ্রি কলেজ এমপিওভুক্ত করতে বছরে লাগে ৬৯ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫০ টাকা; উচ্চমাধ্যমিক কলেজে ৬৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩৩ লাখ ৮০ হাজার, আর নিম্ন-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লাগে ১৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতোই মাদ্রাসাগুলোতে অর্থের প্রয়োজন।

সম্পর্কিত পোস্ট

রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ

banglarmukh official

ডেঙ্গুতে একদিনে ৬ মৃত্যু, হাসপাতালে ১২৪৮ জন

banglarmukh official

দিনে ৯০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স আসছে দেশে

banglarmukh official

কর্মসংস্থান সৃষ্টি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য: নাহিদ

banglarmukh official

সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ গ্রেফতার

banglarmukh official

খালেদা জিয়ার কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার চার্জ শুনানি পেছাল

banglarmukh official