সৌম্যর বিদায়ের পর বাংলাদেশ যখন আরও একটি সাকিব-মুশফিকের ক্ল্যাসিক জুটি দেখার অপেক্ষায় ছিল; ঠিক তখনই ছন্দপতন। যুজবেন্দ্র চাহালের বলে মোহাম্মদ শামির তালুবন্দি হন মুশফিকুর রহিম (২৪)। মি. ডিপেন্ডেবলের বিদায়ে বেশ চাপে পড়ে গেছে বাংলাদেশ। উইকেটে এসেছেন লিটন দাস। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জয়ের জন্য ২৬.২ ওভারে টাইগারদের চাই ১৯২ রান।
বড় টার্গেট তাড়ায় নেমে সতর্ক শুরু করেন তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় ওভারে ভুবনেশ্বরকে দুটি বাউন্ডারি মেরে হাত খোলেন তামিম। আজ একটু ভিন্নরূপেই দেখা গেল সৌম্যকে।
শুরু করলেন ধীরে। জুটিতে ৩৯ রান আসার পর মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হয়ে যান ৩১ বলে ২২ রান করা তামিম ইকবাল।
শামির করা ১২তম ওভারে সৌম্য সরকারের বিপক্ষে এলবিডাব্লিউয়ের আবেদন হয়। ফিল্ড আম্পায়ার নাকচ করলে রিভিউ নেয় ভারত। কিন্তু রিভিউটি নষ্ট হলে আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এরপর সৌম্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
হার্দিক পাণ্ডিয়ার বলে বিরাট কোহলির তালুবন্দি হয়ে ৩৮ বলে ৩ রানে ফিরেন তিনি।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ৩১৪ রান সংগ্রহ করে ভারত। বল হাতে বাংলাদেশের শুরুটা দারুণ হয়েছিল। কিন্তু মুস্তাফিজুর রহমানের করা ৬ষ্ঠ ওভারে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলীয় ১৯ রানে বিধ্বংসী ওপেনার রোহিত শর্মার দেওয়া সহজ একটা ক্যাচ হাতছাড়া করেন ভালো ফিল্ডার বলে পরিচিত তামিম ইকবাল! রোহিত তখন ৯ রানে ব্যাট করছিলেন। জীবন পেয়ে লোকেশ রাহুলকে নিয়ে হাত খুলে মারতে থাকেন রোহিত।
১০৫ বলে উদ্বোধনী জুটির রান একশ ছাড়িয়ে যায়। ৪৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন ‘হিটম্যান’ রোহিত। এরপর ৫৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লোকেশ রাহুল। হাফ সেঞ্চুরির পর রোহিত আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। ক্যারিয়ারের ২৬তম এবং চলতি বিশ্বকাপে চার নম্বর সেঞ্চুরি তুলে নিতে রোহিত খেলেন ৯০ বল; হাঁকান ৬টি চার এবং ৫টি ছক্কা। ৩০তম ওভারে অবশেষে এই বিধ্বংসী ওপেনারকে ১০৪ রানে লিটন দাসের তালুবন্দি করেন সৌম্য সরকার। ভাঙে ১৮০ রানের ওপেনিং জুটি।
১৫ রানের ব্যবধানে দ্বিতীয় সাফল্য পায় বাংলাদেশ। রুবেল হোসেনের বলে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি হন অপর ওপেনার লোকেশ রাহুল (৭৭)। এরপরই ভারতের ব্যাটিং দূর্গে জোড়া আঘাত হানেন ‘কাটার মাস্টার’। ৩৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মুস্তাফিজের কাটারে মিডউইকেটে রুবেলের তালুবন্দি হন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি (২৬)। এক বল পরেই ওয়াইড স্লিপে সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হন হার্দিক পাণ্ডিয়া (০)। চার নম্বরে নেমে হাত খুলে খেলছিলেন ঋষভ পন্ট। ৪১ বলে ৪৮ করে সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে ধরা পড়েন। ব্যকওয়ার্ড স্কয়ারলেগের সীমানার ওপর থেকে দুই দফার চেষ্টায় সহজ ক্যাচটি তালুবন্দি করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
২৭৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পর রান এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ধোনি আর দিনেশ কার্তিক। কিন্তু অভিজ্ঞ কার্তিককে (৮) নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন দ্য ফিজ। এই তারকা পেসারের চতুর্থ শিকার মহেন্দ্র সিং ধোনি (৩৫)। শেষ ওভারে মুস্তাফিজের বলে রান-আউট হয়ে যান ভুববনেশ্বর কুমার (২)। শেষ বলে শামিকে (১) বোল্ড করে বিশ্বকাপে প্রথমবার পাঁচ উইকেট শিকার করেন দ্য ফিজ। এজন্য ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ তিনি দিয়েছেন ৫৯ রান।