সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী প্রিয়াংকা সরদারের বরিশাল শহরের একটি ভাড়াটিয়া বাসায় রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত ১৯ জুন রাতে মুমূর্ষু অবস্থায় ওই ছাত্রীকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন ভাড়াটিয়া বাসার মালিকের ছেলে। ঘটনার ৩ দিন পর পরে ২৩ জুন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
কলেজছাত্রীর ভাই সজল অভিযোগ করেছেন- প্রিয়াংকাকে ধর্ষণের পর নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এই বিষয়টি কোতয়ালি থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া আশ্বাস দিয়েছে।
ওই ছাত্রীর ছোট ভাই উজিরপুরের জল্লা ইউনিয়নের মুন্সিরতাল্লুক গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় সরদার মুঠোফোনে জানান, তার বোন বরিশাল হাতেম আলী কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল। গত ৩ থেকে ৪ বছর ধরে সে বরিশালের বিভিন্ন মেসে ভাড়া থেকে পড়াশুনা করেছে। গত ৬ থেকে ৭ মাস আগে বিএম কলেজের সামনে তালভিটা দ্বিতীয় গলিতে সাবেক প্রয়াত এএসপি বেলায়েত হোসেনের বাসা খান ভিলার একটি রুম ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। একই বাসায় থাকতেন মালিকের স্ত্রী পিয়ারা বেগম ও তার ছোট ছেলে সোহেল খান।
গত ১৯ জুন রাতে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর দিন মোবাইল ফোনে তাদের জানানো হয় প্রিয়াংকার জ¦র হলে তাকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে তারা শেবাচিমে ছুটে গেলেও তার বোনের সাথে কথা বলতে পারেননি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মুত্যু হয়।
কলেজছাত্রীর ভাই সঞ্জয় বলেন- তার বোনের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এই কারণে তারা ধারনা করছেন- প্রিয়াংকাকে ধর্ষণের পরে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
তবে এই বিষয়টি অস্বীকার করে খান ভিলার মালিক প্রয়াত এএসপি বেলায়েত হোসেন খানের স্ত্রী পিয়ারা বেগম বলছেন- রাতে গোঙরানীর শব্দ শুনে ওর ঘরে গিয়ে দেখতে পান কলেজছাত্রী বাথরুমের পাশে মেঝতে পড়ে আছে। এসময় তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু ঘটনার পর পরিবারের সদস্যদের কেন জানানো হয়নি এ বিষয়ে কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি তিনি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম বলেন- মৌখিক অভিযোগ পেয়েই তিনি ঘটনা তদন্ত শুরু করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশও পাঠিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিষয়টি ঢাকার শাহাবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসি ও এডিসিকে অবহিত করা হয়েছে।
কোন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কী না তা খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।’