গাছের দাম ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ! দাম শুনে হাঁ ! হয়তো বিশাল কোনো গাছ। মোটেও তা নয়। ছোট ছোট পাতার মাঝারি আকারের নৌকার মতো করে সাজানো মালফুজিয়া এটি। দেখা পাওয়া গেল বান্দ রোডস্থ বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেলস পার্ক) আয়োজিত পক্ষকালব্যাপী বিভাগীয় বৃক্ষমেলায়। এ বছর আয়োজিত বৃক্ষমেলার সবচেয়ে দামি এ গাছটি রয়েছে জাতীয় পুরুস্কার ২০১৪ প্রাপ্ত মেসার্স নেছারাবাদ নার্সারির স্টলে।
স্টলের কর্মী মো.আবুল হোসেন জানালেন, এবারের মেলায় সবার দৃষ্টি এই মালফুজিয়া গাছটির দিকে। এই গাছটি পরিচর্যা করে আমাদের এই রূপে আনতে সময় লেগেছে প্রায় ৮ বছর।
মেসার্স নেছারাবাদ নার্সারির স্বত্তাধীকারী মানিক হোসেন বাহাদুর বলেন , গাছটি আমার খুব শখের। আমি আওয়ামী লীগ’র সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে খুব পছন্দ করি।আমার আওয়ামী লীগ দলটি ভালো লাগে। তাই গাছটির রূপ দিয়েছি আওয়ামী লীগ’র প্রতিক নৌকার মতো।
এছাড়াও মেসার্স কহিনুর নার্সারি স্টলে নৌকা আকৃতির আরও একটি ফুলের গাছ দেখা গেছে। যদিও স্টল কর্তৃপক্ষ বলছেন গাছটি বিক্রির জন্য নয়। স্টলের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই রাখা হয়েছে।
“শিক্ষায় বন প্রতিবেশ, আধুনিক বাংলাদেশ” প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে বরিশালে ১৫ দিন ব্যাপী বিভাগীয় বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন করা হয় গত ২৫ জুলাই। বরিশাল জেলা প্রশাসন এর সহযোগিতায় ও সামাজিক বন বিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং উপকূলীয় অঞ্চল আয়োজিত পক্ষকাল ব্যাপী বিভাগীয় বৃক্ষ মেলা চলবে আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত। এ মেলার উদ্বোধন করেন পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী পদমর্যাদা) আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ-এমপি।
বঙ্গবন্ধু উদ্যানে শুরু হওয়া এই মেলায় এবার ২৪টি স্টল রয়েছে। যার মধ্যে ৫টি সরকারি ও বাকি ১৯টি বেসরকারি। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮ পর্যন্ত চলবে মেলার কার্যক্রম। কোন দর্শনী ছাড়াই দর্শকরা মেলায় প্রবেশ এবং পছন্দের বৃক্ষ কিনতে পারবেন।
মেলায় আসা বিভিন্ন নার্সারীর বিক্রেতারা জানালেন, ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ছাদে বড় টবে বা ড্রামে লাগানো যায় এমন চারা মেলায় বেশি রয়েছে। এ ছাড়া ক্যাকটাস, অর্কিড, নানা জাতের পাতাবাহার ও ফুলের চারার চাহিদাও প্রচুর। ফ্ল্যাটের বারান্দায় বা ড্রয়িংরুমে টবে এগুলো লাগানো যায়। তাতে বাগান করার শখও মেটে, গৃহসজ্জাতেও বৈচিত্র্য আসে।
মেলায় বিভিন্ন জাতের ক্যাকটাস, ভেন্ডা, কামপারা এসব অর্কিডের বিস্তর ছোটবড় চারা রয়েছে। দাম সর্বনিম্ম ৫০ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া রয়েছে ফুলের চারার চাহিদা। মেলার বিভিন্ন স্টলে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন জাতের ফুল। মানভেদে বিভিন্ন ফুল গাছের চারা কিনতে গুনতে হবে ৫০ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে বৃক্ষমেলায় ছোটবড় সবারই দৃষ্টি কেড়ে নেয় আমগাছগুলো।
গত শনিবার মেলায় কথা হয় … সানজিদা পারভীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখানকার প্রতিটি স্টলেই আছে টবে লাগানো নানা জাতের আমগাছ। বাড়ির ছাদে বাগান করার জন্য আম্রপালি, পালমার, হিমসাগরসহ কয়েক জাতের আম আর লিচুর চারা কিনেছি আমি।’
মেসার্স কহিনুর নার্সারি স্টলের কর্মী নাজরুল বলেন, ‘বিভিন্ন জাতের আমের পাশাপাশি মেলায় নানা ধরনের বিদেশি ফলের গাছের প্রতিও আগ্রহ দেখা গেল অনেকের।