খুলনা প্রতিনিধি// জান্নাতুল ফেরদৌস :
ব্যাটারি চালিত রিক্সা চালকদের ডাকা ধর্মঘটে গতকাল সোমবার দিনভর নগরীতে গণপরিবহন সংকট ছিল আলোচনার বিষয়। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়লেও নগরীর সড়কগুলোতে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ছিল চোখে পড়ার মত। সন্ধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ছিল না যানজট। তবে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ ছিল চরমে। এ সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বেবি, মাহেন্দ্র ও ইজিবাইক চালকরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তিন দফায় সময় বৃদ্ধির পর নগরীতে ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলাচল বন্ধে কেসিসি’র বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। এর প্রতিবাদে রিক্সা মালিক শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। রোববার রাতে দৌলতপুর রিক্সা ভ্যান চালক ইউনিয়ন অফিসে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রিকশাচালকরা নগরীর সাত রাস্তার মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এ সময় তারা সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানের বাড়ির সামনে বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করেন। এরপর জাতিসংঘ পার্ক হয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে গিয়ে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। রিক্সা চালকদের এমন ধর্মঘটের ডাকে সারাদিন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সাধারণ পথচারীদের। আমিনুল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, হঠাৎ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ হয়ে যাওয়া ইজিবাইকে বেশি ভাড়া দিয়ে আসতে হয়েছে। আর পায়ে চালিত রিকশা তো পাওয়াই যাচ্ছে না। কেসিসির সূত্র জানিয়েছে, গতকাল সোমবার কেসিসির নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়েছে। তবে মালিক-চালকরা রিক্সা থেকে এখনও ব্যাটারি অপসারণ করেননি। এ অবস্থায় কেসিসি ও ওজোপাডিকো রিক্সার ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার পয়েন্টগুলো অপসারণে কাজ শুরু করেছে। নগরীতে ৩৮৭টি এমন চার্জিং পয়েন্ট বাছাই করা হয়েছে। যেখানে এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। কেসিসির সহকারি প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নগরীর মধ্যে ৩৮৭টি ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশন এবং ওজোপাডিকোর সাথে সমন্বয় করে অভিযান পরিচালনা করবে। ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার পয়েন্টগুলো বিচ্ছিন্ন করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে অভিযান। সূত্রটি আরও জানায়, প্রথম দফায় পহেলা জুলাই থেকে খুলনা নগরী ব্যাটারি চালিত রিকশামুক্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে তিন মাস বাড়িয়ে তা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়। পরে কেসিসির বিশেষ সাধারণ সভায় আরো সময় বাড়িয়ে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়। তবে এরপরও মালিক-চালকরা ব্যাটারি অপসারণ করেননি। দৌলতপুর থানা রিক্সা ভ্যান চালক ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ সেলিম শিকদার বলেন, সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। আমরা আজ (সোমবার) রাতে ঢাকা যাচ্ছি শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সাথে কথা বলব। একটা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালানো হবে। কেসিসির ভারপ্রাপ্ত মেয়র আমিনুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘ব্যাটারি চালিত রিক্সার কারণে প্রতিনিয়ত শহরে ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই আছে। তারপরও চালক-মালিকদের দাবির মুখে মেয়র তিন দফায় সময় দিয়েছেন। এরপরও যদি কেউ নির্দেশনা না মানে তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’