স্বামীকে ফেলে প্রেমিকের সাথে বিয়ে করে সংসার করার জন্য অভিনব কৌশল অবলম্বন করে স্ত্রী মুক্তি বেগম। পালিয়ে যাওয়ার আগে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ছবি এডিট করে রাখে। তারপর প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়ার সময় ননদের মোবাইলে ইমো থেকে হত্যা করা হয়েছে এমন ছবি পোস্ট করে এবং একটি খুদে বার্তা পাঠায় । খুদে বার্তায় বলা হয়, তুই যেই হোস এই মেয়েটার আত্মীয়দের বলে দিস, আমি ওকে খালাস করে দিয়েছি, ওর সব জেদ আজকে শেষ করছি। বাড়ি যাচ্ছিল তাই না? আসল বাড়ি পাঠিয়ে দিলাম। লাশটা খুজে নিশ। টাটা।` এরপর বন্ধ করে দেওয়া হয় স্ত্রী মুক্তির মোবাইল।
ঘটনার আগে চলতি মাসের গত ১১ মে মুক্তি বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর থেকে নিখোঁজ হয় মুক্তি। এর পর স্বামী আকমল হোসেন বাদী হয়ে ওই দিনই বড়াইগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে এবং ময়ময়সিংহ জেলা পুলিশের সহায়তায় গতকাল মুক্তি ও প্রেমিক আবেদকে ময়ময়সিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার দেবগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে নাটোরে নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে নাটোর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আকমল হোসেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল গ্রামের মমিন সরদারের ছেলে। অপরদিকে স্ত্রী মুক্তি বেগম একই গ্রামের মমিন প্রামাণিকের মেয়ে। তারা সম্পর্কে মামাত-ফুফাত ভাইবোন। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর আকমল হোসেন স্ত্রী মুক্তি বেগমকে সাথে নিয়ে ঈশ্বরদী শহরে একটি ভাড়া বাসায় থেকে একটি ভ্যাটেনারী ঔষধ কোম্পানিতে চাকুরী করতেন। ঈশ্বররদীর বাসায় ভাড়া থাকার সময় মুক্তির সাথে মোবাইলে ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার দেবগ্রামের আব্দুল মেতালেবের ছেলে সানোয়ার হোসেন আবেদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু মুক্তি বিবাহিতা বিষয়টি আবিদের কাছে গোপন করে। এজন্য সে নিজেকে হত্যার নাটক করে। সেই নাটকের অংশ হিসেবে মুক্তি চলতি মাসের ১১মে বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বরে হয়। এরপর রাজাপুর থেকে ননদের মোবাইলে ইমো মেসেজ ও ছবি পাটিয়ে নিখোঁজ হয়। এরপর মুক্তি সিএনজি নিয়ে হাটিকুমরুল পৌঁছে। সেখানে আবিদের সাথে মাইক্রোবাসে উঠে তারা পালিয়ে যায় এবং বিয়ে করে স্বামী স্ত্রী রুপে দেবগ্রামে সংসার করতে শুরু করে।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।